মায়ের কবরে আবেগঘন শুভ: ‘তোমার স্মৃতিতেই বেঁচে আছি, মা’
Published: 7th, June 2025 GMT
অভিনেতা আরিফিন শুভর মা–ভক্তির কথা তার অনুরাগীদের অজানা নয়। মা হারানোর ১৬ মাস ১৩ দিন পরও যেন মায়ের শূন্যতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে শুভকে। প্রায়ই মাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্মৃতিচারণা করেন।ঈদের দিনেও সেই মাকেই মনে করলেন তিনি। এমন আনন্দের দিনে মাকে স্মরণ করে আবেগে ভেসে গেলেন এই অভিনেতা।
ঈদের দিন মায়ের করব জিয়ারত করার একটি ছবি পোস্ট করেছেন শুভ। সেখানে দেখা যাছে, মায়ের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি মোনাজাত করছেন।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মা, তোমার মনে আছে? ছোটবেলায় ঈদের দিন নতুন জামা পরে তোমার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই, তুমি কী বলতে আমাকে?’
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে ৮ ঘণ্টায় পশুর বর্জ্য অপসারিত: মেয়র
ঈদের শহরে মাংসের হাট
এরপর তিনি লিখেছেন, ‘আজও নতুন জামাটা পরেই তোমার কাছে গিয়েছিলাম। তুমি কি চিনতে পেরেছ, আমার ঈদের জামার কাপড়টা। আমার গলার চেইন খেয়াল করেছিল? তোমার সব কিছুই আমি খুব যত্নে রেখেছি মা, শুধু রাখতে পারলাম না তোমাকে।‘
একদম শেষে গভীর শোক নিয়ে এই অভিনেতা লিখেছেন, ‘আমাদের দেখা হওয়ার দিনে আজ আকাশটাও কাঁদছিল, মা। আমি কিন্তু আজ একটুও কাঁদিনি.
প্রায় ৮ বছর ধরে শুভর ঢাকার বাসাতেই থাকতেন তার মা খাইরুন নেছা। ২০১৭ সাল থেকে সিজোফ্রেনিয়া রোগে ভুগছিলেন তিনি। এছাড়া, বার্ধক্যজনিত আরও নানান সমস্যা ছিল।
২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি আরিফিন শুভ তার মাকে হারান।
উল্লেখ্য, ‘নীলচক্র’ সিনেমা দিয়ে অনেক দিন পর ঈদে ফিরেছেন আরিফিন শুভ। ৭ জুন মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এখানে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। এছাড়া মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার ‘নূর’, ‘লহু’ ও ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’। বলিউডের ‘জ্যাজ সিটি’ শিরোনামের একটি ওয়েব সিরিজও মুক্তির অপেক্ষায় আছে এই নায়কের।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।