ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ৭৫টি ওয়ার্ডের কোরবানির পশুর বর্জ্য নির্ধারিত ১২ ঘণ্টার সময়সীমার আগে অপসারণ করা হয়েছে। ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) দুপুর পৌনে ২টায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হয়। 

ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.

রাসেল রহমান শনিবার (৭ জুন) রাতে  জানান, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই ৭৫টি ওয়ার্ডের কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। নগরবাসীর সহযোগিতা, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিরলস পরিশ্রম এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।

এবারের ঈদুল আজহায় ডিএসসিসি এলাকায় মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি পশু কোরবানি হয়। কোরবানির পরপরই প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে নেয়া হয় এবং সেখান থেকে তা ডাম্প ট্রাকের মাধ্যমে মাতুয়াইল স্যানেটারি ল্যান্ডফিলে ফাইনাল ডাম্পিং করা হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য সেখানে ফেলা হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার মেট্রিক টনের অংশ।

আরো পড়ুন:

কুয়াকাটায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীতে পশু কোরবানি

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবার মাঠপর্যায়ে কাজ করেছে ১০ হাজারেরও বেশি জনবল।

ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, “পরিচ্ছন্নতা কর্মী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই যে নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করেছেন, তা প্রশংসনীয়। বৃষ্টির মধ্যেও তারা নিরলসভাবে কাজ করে নগরবাসীর ভোগান্তি এড়াতে ভূমিকা রেখেছেন।”

ডিএসসিসি জানিয়েছে, ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন যারা কোরবানি করবেন, তাদের বর্জ্য অপসারণের জন্যও করপোরেশন প্রস্তুত রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ঈদের পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা/এএএম/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র বর জ য ড এসস স ক রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনা-ঢাকা রুটে আবারও বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

রাবেয়া বেগম আজ রোববার সকাল নয়টার দিকে ঢাকা থেকে পাবনার বেড়াগামী আলহামরা পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন। গন্তব্যের ২০ কিলোমিটার আগে পৌঁছার পর জানতে পারেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর হয়ে পাবনার বাস যেতে পারবে না। শাহজাদপুর বাসস্ট্যান্ডের অনেক আগে তালগাছি এলাকায় সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তাঁকে বেড়ায় পৌঁছাতে হয়।

পাবনা ও শাহজাদপুরের অনেক যাত্রীকে আজ রোববার দিনভর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এই দুর্ভোগের কারণ, পাবনা ও শাহজাদপুর বাসমালিকদের পুরোনো দ্বন্দ্ব। আজ সকাল থেকে দুই এলাকার বাস চলাচল আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। পাবনা থেকে শাহজাদপুর হয়ে ঢাকা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে কোনো বাস চলাচল করছে না। একইভাবে শাহজাদপুর থেকেও পাবনার দিকে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না।

বাসমালিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে চলতি বছরেই অন্তত চারবার বাস চলাচল বন্ধ ছিল। আর গত সাত-আট বছরে বাস চলাচল বন্ধ ছিল অন্তত ৩০ বার। একবার বাস চলাচল বন্ধ হলে তা চালু হতে সময় লেগেছে পাঁচ দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত।

বাসমালিক ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতি ও পাবনার নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রুট ও সময়সূচি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। পাঁচ-ছয় দিন আগে নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির লোকজন শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতির মালিকানাধীন নবীনবরণ পরিবহন নামের একটি বাস আটকায়। এর প্রতিবাদে শাহজাদপুরের বাসমালিকেরা নগরবাড়ী সমিতির মালিকানাধীন বাসগুলো চলাচলে বাধা দেন। ঘটনার জেরে গতকাল শনিবার পাবনার দাশুড়িয়ায় নবীনবরণ পরিবহনের একটি বাস আটকে রাখে পাবনা বাসমালিক সমিতি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আজ সকালে শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতি শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে পাবনার সব বাসের চলাচল বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে পাবনার সড়ক দিয়েও শাহজাদপুরের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাবনা ও শাহজাদপুর উভয় সমিতির দুই শতাধিক বাস আজ সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকেরাও।

এদিকে পাবনা থেকে বেড়া হয়ে ঢাকাগামী বেশির ভাগ পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। দু–একটি বাসের কাউন্টার খোলা থাকলেও সেসব বাস বেড়া থেকে যাত্রী নিয়ে কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে অথবা নাটোরের বনপাড়া হয়ে প্রায় ১০০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে ঢাকা যাচ্ছে।

পাবনা এক্সপ্রেস পরিবহনের বেড়া কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ‘শাহজাদপুর হয়ে পাবনার কোনো বাস যেতে না পারায় আমাদের বাসগুলো হয় ফেরি হয়ে, না হয় নাটোরের বনপাড়া ঘুরে ঢাকা যাচ্ছে।’

শাহজাদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পাবনা ও নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতি আমাদের বাস চলাচলে বাধা দেওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রীদের যেমন দুর্ভোগ হচ্ছে, তেমনি উভয় মালিক সমিতিরই ক্ষতি হচ্ছে। দুই পক্ষ আলোচনায় বসলে আশা করি সমাধানের পথ পাওয়া যাবে।’

পাবনা বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোমিন মোল্লা বলেন, ‘শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতির লোকজন প্রায় এক মাস ধরে নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির বাসগুলো শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে যেতে দিচ্ছিল না। আজ থেকে তারা পাবনার সব বাসের চলাচল বন্ধ করে দিল। শাহজাদপুর মালিক সমিতি ছোটখাট যেকোনো ব্যাপার হলেই তাদের এলাকার ওপর দিয়ে পাবনার বাস চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাবনা-ঢাকা রুটে আবারও বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা