১২ ঘণ্টার আগেই ডিএসসিসির ঈদের বর্জ্য অপসারণ
Published: 8th, June 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ৭৫টি ওয়ার্ডের কোরবানির পশুর বর্জ্য নির্ধারিত ১২ ঘণ্টার সময়সীমার আগে অপসারণ করা হয়েছে। ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) দুপুর পৌনে ২টায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.
এবারের ঈদুল আজহায় ডিএসসিসি এলাকায় মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি পশু কোরবানি হয়। কোরবানির পরপরই প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে নেয়া হয় এবং সেখান থেকে তা ডাম্প ট্রাকের মাধ্যমে মাতুয়াইল স্যানেটারি ল্যান্ডফিলে ফাইনাল ডাম্পিং করা হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য সেখানে ফেলা হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার মেট্রিক টনের অংশ।
আরো পড়ুন:
কুয়াকাটায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীতে পশু কোরবানি
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবার মাঠপর্যায়ে কাজ করেছে ১০ হাজারেরও বেশি জনবল।
ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, “পরিচ্ছন্নতা কর্মী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই যে নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করেছেন, তা প্রশংসনীয়। বৃষ্টির মধ্যেও তারা নিরলসভাবে কাজ করে নগরবাসীর ভোগান্তি এড়াতে ভূমিকা রেখেছেন।”
ডিএসসিসি জানিয়েছে, ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন যারা কোরবানি করবেন, তাদের বর্জ্য অপসারণের জন্যও করপোরেশন প্রস্তুত রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ঈদের পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/এএএম/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র বর জ য ড এসস স ক রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।
মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।