শরিফুলের হাত ধরে সীমান্তঘেঁষা উপজেলায় ‘তেঁতুলিয়া টাইটান্স ক্লাব’
Published: 8th, June 2025 GMT
দেশের একেবারে উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা তেঁতুলিয়া। সেখানে ক্রীড়াবিদ উঠে আসার সুযোগ-সুবিধা ছিল সামান্য। সেই সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং তরুণ ক্রীড়া প্রেমী, অনুরাগী ও ক্রীড়াবিদদের স্বপ্ন দেখাতে আত্মপ্রকাশ হয়েছে ‘তেঁতুলিয়া টাইটান্স ক্লাব’।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও পঞ্চগড়ের কৃতি সন্তান শরিফুল ইসলাম রোববার এই সংগঠনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ক্লাবটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব সরকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময়ে জাতীয় দলের দুই কৃতি খেলোয়াড়- শরিফুল ইসলাম ও মোরশেদ আলীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
তেঁতুলিয়া টাইটান্স ক্লাবের উদ্দেশ্য শুধু খেলার আয়োজন নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে স্থানীয় ক্রীড়া প্রতিভা খুঁজে বের করা ও তাদের গড়ে তোলা। ফুটবল, ক্রিকেট, হ্যান্ডবল ও ভলিবলসহ সব ক্রীড়া ক্ষেত্রেই নিয়মিত টুর্নামেন্ট আয়োজন, প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উপজেলাকে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত করতে চায় তেঁতুলিয়া টাইটান্স ক্লাব।
আরো পড়ুন:
রিঙ্কুর বাজিমাত, নারী এমপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাধলেন
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল: যা যা জানা জরুরী
শরিফুল নিজের বক্তব্যে বলেছেন, ‘‘আমার শেকড় এই অঞ্চলে। এখানকার তরুণরা অনেক মেধাবী। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করলে একদিন এখান থেকেও জাতীয় দলের খেলোয়াড় তৈরি হবে। তেঁতুলিয়া টাইটান্স ক্লাবের উদ্যোগ আমাকে সত্যিই আনন্দিত করেছে। তাদের জন্য শুভ কামনা রইলো।’’
তেঁতুলিয়া টাইটান্স ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব সরকার বলেছেন, ‘‘আমাদের তেঁতুলিয়ার ক্রীড়ামুখী তরুণদের জন্য একটি স্থায়ী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাই। এই ক্লাব হবে তাদের স্বপ্ন পূরণের সোপান। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে তেঁতুলিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ক্লাব স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে আলো ছড়াবে প্রত্যাশা আমাদের।’’
পঞ্চগড়/নাঈম/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ইট ন স ক ল ব
এছাড়াও পড়ুন:
লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন, ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ
অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযানের জেরে টানা দুই দিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট দলীয় গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম।
স্থানীয় সময় রোববার সকাল থেকে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের লস অ্যাঞ্জেলেসে দেখা গেছে। এর আগে দুই দিন সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। খবর-বিবিসি
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিটি হলের কাছে রোববার ভোরে হেলমেট পরা সেনাদের অস্ত্র এবং হাতে ঢাল নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়। দুপুরের পর আরও বিক্ষোভ হওয়ার আশঙ্কায় আগে থেকেই সেখানে তাঁদের মোতায়েন করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়। বিশেষ করে লাতিন-অধ্যুষিত একটি ডিস্ট্রিক্টে অভিযানে গেলে স্থানীয় লোকজন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। সেখানকার প্যারামাউন্ট ডিস্ট্রিক্টে বিক্ষুব্ধ মানুষদের সরাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়, লাঠিপেটা করা হয়।
আইসিইর অভিযানে এ সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ১১৮ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ জন আটক হয়েছেন গত শুক্রবার। যদিও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট-দলীয় গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ অভিযানকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় হোয়াইট হাউস থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব অভিযান যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবৈধ অপরাধীদের’ অনুপ্রবেশ বন্ধ ও তাদের প্রতিহত করার জন্য অপরিহার্য। লস অ্যাঞ্জেলেসের এখনকার পরিস্থিতিতে যেকোনো সহিংসতা কিংবা ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করার চেষ্টায় ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানোর ঘোষণা দিয়েছেন টম হোম্যান।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ অভিযানকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে নিন্দা জানান। এ ঘটনায় হোয়াইট হাউস থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এসব অভিযান যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবৈধ অপরাধীদের’ অনুপ্রবেশ বন্ধ ও তাঁদের প্রতিহত করার জন্য অপরিহার্য। এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ব্যর্থ’ ডেমোক্র্যাট নেতারা তাঁদের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন। এমন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে দেওয়া অরাজক পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের আদেশে সই করেছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
অভিযান চলাকালে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় কয়েকজনকে আটকের কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) উপপরিচালক ডন বনগিনো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স পোস্টে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে তিনি লেখেন, ‘আপনি অরাজকতা করলে আমরা আটক করব। আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকবে।’ আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ডেভিড হুয়ের্তা রয়েছেন। তাঁকে শুক্রবার আটক করা হয়। হুয়ের্তা সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়নের (এসইআইইউ) ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সভাপতি।
তবে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ঘাটতির কারণে নয়, বরং তাঁরা একটি নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে চান। এ সময় বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তাদের (ট্রাম্প প্রশাসনকে) সে সুযোগ দেবেন না। কখনো সহিংস হবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করুন।’
ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বিরোধিতা করেছে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নও (এসিএলইউ)। মানবাধিকার সংগঠনটি মনে করে, লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর ট্রাম্পের নির্দেশ ‘অপ্রয়োজনীয়, উসকানিমূলক ও ক্ষমতার অপব্যবহার’।
এসিএলইউর ন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রজেক্টের পরিচালক হিনা শামসি বলেন, ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দাদের ‘ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে’।
এদিকে বিক্ষোভ দমনে প্রয়োজনে লস অ্যাঞ্জেলেসে মেরিন সেনা মোতায়েনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তিনি জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় ক্যাম্প পেন্ডলটনে থাকা মেরিন সেনারা মোতায়েনের জন্য ‘উচ্চ সতর্কতায়’ রয়েছেন।
বিক্ষোভ মোকাবিলায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘোষণা দিয়ে শনিবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, সহিংসতা অব্যাহত থাকলে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ওই ঘাঁটির মেরিন সেনাদেরও মোতায়েন করা হতে পারে।