মিলছে আশানুরূপ ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ, কুয়কাটায় ঘাটজুড়ে ব্যস্ততা
Published: 12th, June 2025 GMT
১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে গেছেন জেলেরা। গভীর সাগরে যাওয়া বড় বড় মাছ ধরা ট্রলারগুলো এখনো ঘাটে ফেরেনি। তবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ডিঙ্গি নৌকা ও ছোট ট্রলার নিয়ে সাগরে যাওয়া অনেকেই ফিরেছেন কাঙ্খিত মাছ নিয়ে।
তবে ট্রলার নিয়ে না ফিরলেও গভীর সাগরে অবস্থানরত ট্রলারগুলোতে মাছ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছে আড়ৎদারেরা। বড় ট্রলারগুলো ঘাটে না ফেরায় সরবারহের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছের দাম বেশ চড়া।
সরেজিমনে ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই কুয়াকাটার পাইকারী মৎস্য আড়ৎ, মহিপুর ও আলিপুর মৎস্য অবতরণকেন্দ্র, গলাচিপার পানপট্টি পাইকারী মৎস্য আড়ৎ এবং রাঙ্গাবালি উপজেলার পাইকারি মৎস্য আড়ৎ ঘাটে ফিরেছে ছোট ছোট মাছ ধরা ট্রলারগুলো। জেলে, আড়ৎদার ও পাইকারী ব্যবসায়ীদের হাক ডাকে মুখরিত হয়েছে উঠেছে এসব পাইকারী বাজারগুলো।
এসব বাজারে ইলিশসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বাজারগুলোতে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা কেজি দরে। ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি দরে। ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি করে।
দীর্ঘদিন শুনসান নীরব থাকা এসব বাজারগুলো প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরে আসা এবং আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ায় উচ্ছ্বসিত জেলেরা।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ট্রলার আল্লাহর দোয়া-৪ এর জেলে আবুল কালাম বলেন, “আমরা রাতে সাগরে জাল ফেলার পরই ইলিশসহ সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু মাছ ধরা পড়ে। তাই এখানে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে এসেছি। দামও বেশ ভালো পেয়েছি। এভাবে মাছ ধরা পড়লে আমরা পিছনের ধার দেনা কাটিয়ে উঠতে পারব।”
লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসুল্লীয়াবাদ গ্রামের জেলে কবির মিয়া বলেন, “আমরা মূলত ছোট ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে সন্ধ্যায় মাছ শিকারে যাই করে দেয় এবং সকালে ফিরে আসি। গতকাল অবরোধের পর পরই সাগরে নেমেছি। প্রথম দিন আশানুরূপ মাছও পেয়েছি। এভাবে আল্লাহ মাছ দিলে আমরা এ পেশায় টিকে থাকতে পারব।”
কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “উপকূলের জেলেরা ৫৮ দিন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকায় সামুদ্রিক ৪৭৫ প্রজাতির মাছের প্রজনন সুষ্ঠু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করছি সবাই মাছ পাবে। অনেক জেলের জালে ঝাঁকে ঝাঁকেও ইলিশ ধরা পড়তে পারে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।
তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।
এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।
আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।
ঢাকা/আমিনুল