ভারতের আহমেদাবাদে ২৪২ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির ৭৮৭ মডেলের। এই মডেলের কোনো উড়োজাহাজের এভাবে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এই দুর্ঘটনায় যত প্রাণহানি হয়েছে, তাতে একে দশকের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বোয়িং ৭৮৭ মডেলের উড়োজাহাজ ‘ড্রিমলাইনার’ নামেও পরিচিত, যা ১৪ বছর আগে আকাশে উড্ডয়ন করে। মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি মডেলটির ১০০ কোটি যাত্রী পরিবহনের মাইলফলক উদ্‌যাপন করেছে।

ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুযায়ী, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি আজ বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেটি থেকে সংকেত পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেটি ওই বিমানবন্দরের কাছের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমান পরিবহন খাতে স্বনামধন্য মডেলের এই উড়োজাহাজের এভাবে বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এভিয়েশন খাতের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে বলেছেন, উড্ডয়নের সময় উড়োজাহাজের ডানার ফ্ল্যাপগুলোর অবস্থান এ দুর্ঘটনার একটি কারণ হতে পারে।

ফ্ল্যাপ হলো উড়োজাহাজের ডানার পেছনের বর্ধিতাংশ। উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় ফ্ল্যাপগুলো বের করে দেওয়া হয়। যখনই ফ্ল্যাপগুলো উন্মুক্ত করা হয়, সেই সঙ্গে ডানার সামনের দিকের বর্ধিতাংশ, যা স্ল্যাট নামে পরিচিত, সেগুলো খুলে যায়। ফলে উড়োজাহাজের ডানার পরিসর বেড়ে যায়। এতে উড়োজাহাজ ওপরের দিকে উঠতে সহায়তা পায়। সাধারণত এক হাজার ফুট ওপরে ওঠার পর ফ্ল্যাপগুলো বন্ধ করা হয়। অপর দিকে উড্ডয়নের সময় উড়োজাহাজ ৫০ ফুট ওপরে উঠলেই ল্যান্ডিং গিয়ার বা নিচের চাকা গুটিয়ে নেওয়া হয়।

বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি নিচের দিকে নামছিল এবং একটি ভবনের ওপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

বিশেষজ্ঞ জিওফ্রে টমাস বলেন, ‘আমি যখন এটা দেখছিলাম, তখনো উড়োজাহাজের নিচের চাকা (আন্ডারক্যারিজ) খোলা ছিল আর ফ্ল্যাপগুলো গুটিয়ে ফেলা হয়েছিল।’

জিওফ্রে টমাস আরও বলেন, এর অর্থ ফ্ল্যাপগুলো ডানার সঙ্গে একই রেখায় অবস্থান করছিল, যেটা উড়োজাহাজ উড্ডয়নের পর এত দ্রুত এমন করাটা খুবই অস্বাভাবিক।

জিওফ্রে টমাস বলেন, ‘সাধারণত উড্ডয়নের ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে নিচের চাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ফ্ল্যাপগুলো গুটিয়ে নেওয়া হয়।’

আরেকজন বিশেষজ্ঞ টেরি টোজার বলেন, ‘ভিডিও দেখে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা কঠিন। তবে মনে হচ্ছে না ফ্ল্যাপগুলো বাইরে বেরোনো অবস্থায় ছিল এবং সেটা হলে তা একটি উড়োজাহাজ সঠিকভাবে উড্ডয়ন সম্পন্ন না করার ব্যাখ্যা হতে পারে।’

সাবেক পাইলট ও বাকিংহামশায়ার নিউ ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মার্কো চ্যান বলেন, ‘যদি ফ্ল্যাপগুলো সঠিকভাবে না রাখা হয়, তাহলে সেটা সম্ভাব্য মানুষের ভুলের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে। কিন্তু ভিডিওর রেজ্যুলেশন এতটাই কম যে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ধ বস ত র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে দ. আফ্রিকা

আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে লড়ছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় দিনেই তিন ইনিংসের ব্যাটিং শেষ হয়েছে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২১২ রানে অলআউট হয়। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৭.১ ওভারে অলআউট হয় ১৩৮ রানে। ৭৪ রানের লিড নিয়ে অস্ট্রেলিয়া তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে। এবার ৬৫ ওভারে তারা অলআউট হয় ২০৭ রানে। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৮২ রান।

এই রান তাড়া করতে নেমে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান সংগ্রহ করেছে। জিততে তাদের এখনও প্রয়োজন ১২২ রান। হাতে রয়েছে ৮টি উইকেট ও আজকের ২৫ ওভারসহ আরও দুইদিন।

রান তাড়া করতে নেমে ৯ রানে রায়ান রিকেলটন (৬) ও ৭০ রানে উইয়ান মুল্ডারের (২৭) উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। সেখান থেকে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এইডেন মার্করাম ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ইনিংস টেনে নেন ১৬২ রান পর্যন্ত।

আরো পড়ুন:

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে একদিনেই ১৪ উইকেটের পতন

ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া

এ রিপোর্ট লেখার সময় মার্করাম ৭ চারে ৭৯ ও বাভুমা ৩ চারে ৪১ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ