আবারও জমজমাট চাঁদপুর লঞ্চঘাট, দিনে পারাপার অর্ধ লক্ষ যাত্রী
Published: 15th, June 2025 GMT
ঝিমিয়ে পড়া চাঁদপুর লঞ্চঘাট নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আবারও জমজমাট হয়ে উঠেছে। সুসজ্জিত ঘাট, চমৎকার আলোকসজ্জা, সিসি ক্যামেরা ও বিভিন্ন বাহিনীর তৎপরতায় দিনে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ এখান দিয়ে যাতায়াত করছে।
শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাতে ঘাট জমজমাট হওয়ার কারণ জানিয়েছেন নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ চাঁদপুরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য।
তিনি জানান, ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে মানুষ ফেরার জন্য লঞ্চকে গুরুত্ব দেওয়ায় ঘাট জমজমাট হয়ে উঠেছে। বর্তমানে চাঁদপুর ঢাকা নৌরুটসহ অন্যান্য স্থানে বড় বড় ৩০টি লঞ্চ যাত্রী পারাপারে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও চাঁদপুর নারায়ণগঞ্জ নৌরুটে ছোট ১৬টি লঞ্চ যাত্রী পারাপার করছে।
তিনি আরো জানান, বড় লঞ্চগুলো ভোর ৬টা হতে শুরু করে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলাচল করছে। তবে দূর দূরান্তের কিছু লঞ্চ আরো গভীর রাতেও ঘাটে ভিড়ছে।
তিনি বলেন, “বড় ছোট সব লঞ্চেই ফায়ার স্টিংগুইশার, বয়াসহ নিরাপত্তা সারঞ্জামাদি প্রতিনিয়ত আমরা তদারকি করছি। তাছাড়া ভাড়া ও যাত্রী অতিরিক্ত কিনা সেটাও দেখভাল করতে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের অন্তত ১০ জন কাজ করছি।”
নীরব নামে এক যাত্রী জানান, চাঁদপুর থেকে ঢাকায় লঞ্চে করে মাত্র ১৮০ টাকায় যাওয়া যাচ্ছে। ঘাটে বেশ কিছু হোটেল আছে, এতে যাত্রীদের সুবিধা হচ্ছে। ঘাটের সামনে অটো সিএনজি চালকদের কোনো বাড়াবাড়ি নেই। তবে লঞ্চগুলো ঢাকা থেকে চাঁদপুর আসা-যাওয়ায় ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মতো সময় লাগাচ্ছে যা বিরক্তিকর। এটা আরও কমিয়ে আনতে পারলে নদীতে নিরাপদ এই লঞ্চযাত্রায় যাত্রীরা আরও স্বস্তি পেতো।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বাছির আলি খান বলেন, “ঈদ পরবর্তী সময়ে কর্মব্যস্ত মানুষের কল্যাণে যাত্রী সাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিআইডব্লিউটিএ’র সুনাম ধরে রাখতে নিয়মিত তদারকি অব্যাহত রেখেছি। এই ঘাট দিয়ে দিনে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ যাতায়াত করছে। সময় কতক্ষণ লাগে সেটা বড় কথা নয়, বরং যারা নিরাপদ নৌ ভ্রমণপ্রেমী তারা নিরিবিলি যাত্রা হিসেবেই নৌপথ ব্যবহার করছে।”
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার রকিব উদ্দিন বলেন, “ঈদ এলেই আমরা এখানে পুলিশের পক্ষ থেকে জরুরি তদারকির জন্য কন্ট্রোল রুম চালু রাখি। এতে নৌপথে অপরাধ প্রবণতা অনেকটা কমে এসেছে। যার কারণে এখানকার লঞ্চঘাটে যাত্রীদের আসা যাওয়ার আনাগোনা বেড়েছে। তাছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের এই লঞ্চঘাট যাত্রীসেবায় অন্যন্য নজির হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি রয়েছে। যা অব্যাহত রাখতে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটকে সাথে নিয়ে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।”
চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের পুলিশ সুপার ছৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, “নৌপথে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির অপতৎপরতা রোধে নিয়মিত টহল চলছে। বড় অঙ্কের নগদ অর্থ বা মূল্যবান জিনিস বহনের ক্ষেত্রে নৌ পুলিশ সহায়তা দিচ্ছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টার্মিনালে প্রবেশের সময় তল্লাশি জোরদার, লঞ্চে ভ্রমণকারী কেবিন যাত্রীদের পূর্ণ তথ্য রেজিস্টারে সংরক্ষণ, যাত্রী টিকিটে নাম-ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য রাখা, সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ এবং লঞ্চ ছাড়ার আগে যাত্রীদের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া লঞ্চের স্টাফদের ওপরও নজরদারি বাড়ানোয় এখন এই লঞ্চঘাট জমজমাট।”
ঢাকা/অমরেশ/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ জমজম ট
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক