বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা করছে বলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে দাবি করা হয়েছে তা নাকচ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, ‘এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট, তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে উল্লেখ করেছে, ‘বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন এক্সে (পূর্বের টুইটার) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা করছে বলে মিথ্যা তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে।’

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়সহ বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী এই গুজব ছড়িয়েছে। গুজবে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের পতাকায় পাকিস্তান ও তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত চাঁদ-তারকার ইসলামি প্রতীক যুক্ত করা হবে।

প্রেস উইং জানায়, ডিজিটালভাবে তৈরি একটি কল্পিত পতাকার ছবি ভাইরাল হয়েছে, যার ভিউ সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ এবং এতে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়েছে — বিশেষত পাকিস্তান, তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের দর্শকদের মধ্যে।

প্রেস উইং বলছে, যে তথ্য হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

১৪ জুন ২০২৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত কোনো গণমাধ্যম এমন পরিকল্পনা বা আলোচনার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

ফ্যাক্ট চেক জানায়, ‘এই বিষয় নিয়ে জাতীয়ভাবে কোথাও আলোচনা হয়েছে এমন কোন ভিত্তি নেই কিংবা দেশি বা আন্তর্জাতিক নির্ভরযোগ্য কোনো সংবাদমাধ্যম এই পদক্ষেপের কথা কোথাও উল্লেখ করেনি।’

বাংলাদেশি ফ্যাক্ট-চেকিং প্ল্যাটফর্ম 'দ্য ডিসেন্ট' জানিয়েছে: ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় একটি ভুয়া প্রতিবেদন প্রচার করেন যার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশ তার পতাকায় পাকিস্তান ও তুরস্কের অনুকরণে ইসলামি চাঁদ যোগ করার কথা ভাবছে’ যা এআই দিয়ে তৈরি করা এবং লেখক রবার্ট ব্রাউনের নামে ৬ জুন প্রকাশিত হয়।

এই ভুয়া প্রতিবেদনটিতে কোনো তথ্যসূত্র, প্রমাণ বা যাচাইযোগ্য উৎস নেই।

‘পাকিস্তানপন্থী এক্স অ্যাকাউন্ট @SouthAsiaIndex নামক আইডি থেকে গত ৪ জুন একটি পোস্ট থেকে এই গুজবের উৎপত্তি হতে পারে। যেখানে প্রথম একটি কাল্পনিক পতাকার ডিজাইন শেয়ার করা হয়। এই একই ছবি পরে সজীব ওয়াজেদের শেয়ার করা ভুয়া প্রতিবেদনে ব্যবহৃত হয়।’

প্রেস উইং জানায়, এই মিথ্যাচার পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করে জাতীয়তাবাদী বা রক্ষণশীল শ্রোতাদের মধ্যে পরিচয়ভিত্তিক উত্তেজনা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে।

এআই প্রযুক্তিতে তৈরি পতাকার ছবি প্রমাণ করে, যে তথ্য ছড়ানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

এটাই প্রথম নয়। জুলাই মাসে বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনের পরে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট — যেমন @AsianDigest- মিথ্যাভাবে দাবি করে যে-ছাত্রনেতারা নতুন জাতীয় পতাকার প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রেস উইং জানায়, সেই পোস্টটি ৯০ হাজারের বেশি ভিউ পায়, পরে তা সম্পূর্ণভাবে খণ্ডন করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এমন কোনো বিষয় শেয়ার করার আগে তা যেন যাচাই করে নেন।

প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশে জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের পক্ষে কোনো আন্দোলন বা দাবি নেই, এবং এসব কল্পিত গল্প কেবল সত্যকে বিকৃত করে অপ্রয়োজনীয় বিভেদ তৈরি করতে চায়।

প্রেস উইং বলছে, ‘চলুন আমরা সত্য তথ্যকে প্রাধান্য দিই এবং ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকি।’

ঢাকা/হাসান/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র বর ত ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে অপহৃত রোহিঙ্গা উদ্ধার, আটক ৩

কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণের ৭২ ঘণ্টা পর অপহৃত রোহিঙ্গা হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত সৈনিক সুমন মুন্সীসহ তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাব। জব্দ করা হয়েছে অস্ত্র। 

রোববার বিকেলে র‌্যাবের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

র‍্যাব ১৫-এর সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও সহকারী পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ডুমরাকান্দি গ্রামের সুমন মুন্সীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা আছে। ১১ জুন রাতে উখিয়া ১৫ নম্বর ক্যাম্প থেকে হাফিজ উল্লাহকে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। তাকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালীর গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে হাফিজ উল্লাহর পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় অপহরণকারীরা। গত শুক্রবার র‌্যাবের একটি দল রঙ্গিখালীতে অভিযান চালিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করে। শনিবার বিকেলে উখিয়ার মরিচ্যা বাজার থেকে সুমন মুন্সীকে আটক করা হয়। রোববার র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বন বিভাগ গহিন অরণ্যে অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে দেশে তৈরি একটি অস্ত্র, ৩ রাউন্ড গুলি, র‌্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ