বরিশালের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের প্রতি অবিচার হয়েছে: বিসিবি সভাপতি
Published: 29th, June 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম মনে করেন, বরিশালের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের প্রতি অতীতে অবিচার করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে নিয়মিত লিগ না হওয়ায় এখানকার সম্ভাবনাময় বহু খেলোয়াড় হারিয়ে গেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। রোববার বরিশাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিসিবি সভাপতি এ কথাগুলো বলেন।
গত ১০ বছরে বরিশালে এক থেকে দেড় হাজার ক্রিকেটার গড়ে উঠতে পারত উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম বলেন, অন্তত ১০০ জন জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করার মতো মানের হতো। অথচ স্থানীয় লিগ না হওয়ায় তাঁদের বিকাশের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। এটা বরিশালের ক্রিকেটারদের প্রতি চরম অবিচার।
বিপিএলে বরিশালভিত্তিক দল ‘ফরচুন বরিশাল’ দুবার চ্যাম্পিয়ন হলেও এখন পর্যন্ত বরিশাল স্টেডিয়ামে কোনো বিপিএল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে বিসিবি সভাপতি বলেন, বরিশালে এখনো নিয়মিত ক্রিকেট কোচিং, আম্পায়ারিং বা কিউরেটর কোর্স হয় না। তবে বিসিবির একটি ছোট অফিস এখানে চালু হবে, যেখান থেকে এসব কার্যক্রম শুরু হবে।
আমিনুল ইসলাম জানান, বরিশাল স্টেডিয়ামের অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে বিসিবির পক্ষ থেকে আরও বড় পরিকল্পনা নেওয়া হবে। ক্রিকেটার তৈরি ও খুঁজে বের করার বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা কানেক্ট অ্যান্ড রো নামের একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, যার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটার খুঁজে বের করা হবে। প্রতিটি উপজেলার খেলোয়াড়দের তথ্য বোর্ডের ডেটাবেজে থাকবে।’
বিসিবি সভাপতি জানান, জেলার কোচরা উপজেলাভিত্তিক খেলোয়াড়দের পর্যালোচনা করে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিবেদন দেবেন। এতে করে ঢাকাভিত্তিক নির্ভরতা কমে যাবে এবং বিভাগীয় দলগুলো আরও শক্তিশালী হবে। প্রতিটি বিভাগীয় হেডকোয়ার্টারে বিসিবির একটি কার্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আমিনুল ইসলাম আরও জানান, প্রধান কোচ ও হাই পারফরম্যান্স কোচের অধীনে এখানকার সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তবে প্রাকৃতিক ক্রিকেট বৃদ্ধির ধারায় কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না।
২৯ দিন হলো বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এখনই কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না। তবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি—বরিশালে বিপিএল ম্যাচ হলে এখানে গ্যালারি লোকারণ্য হবে। আমরা চাই বরিশাল একটি কার্যকর ও সক্রিয় ক্রিকেট বিভাগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক।’
রজতজয়ন্তী উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজন
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বরিশাল স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল অনূর্ধ্ব-১২ বয়সী কিশোর ও কিশোরীদের নিয়ে পৃথক দুটি ‘সিক্স-এ-সাইড’ টুর্নামেন্ট এবং ‘পেস বোলিং হান্ট ক্যাম্প’। এই প্রথম কোনো বিসিবি সভাপতি বরিশাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত হলেন। এতে বরিশালের ক্রীড়ামোদী ও ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার আবু রায়হান, জেলা প্রশাসক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর শ ল স ট ড য় ম আম ন ল ইসল ম বর শ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক