প্রথম আলোর লেখকদের একটি মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল শনিবার। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা থেকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান ও গণমাধ্যম নিয়ে নানা অভিমত ও পরামর্শ উঠে আসে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে লেখকদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। প্রথম আলোর দীর্ঘ ২৬ বছরের পথচলায় নানা বাধা–বিপত্তি, সীমাবদ্ধতা, সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তিনি।

লেখকেরা প্রথম আলোর বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার প্রশংসা করেন। বিশেষ করে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময়ে অনেক বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রথম আলো যে সাহসী ভূমিকা রেখেছে সে জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি ও জন–বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) উপাচার্য ম.

তামিম, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, লেখক ও গবেষক মোরশেদ শফিউল হাসান, আইইউবিএটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রসুল, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ ও গওহার নঈম ওয়ারা।

আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম সামছুল হক, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এস কে তৌফিক হক, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন শিকদার, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌমিত জয়দ্বীপ, লেখক ও গবেষক খান মো. রবিউল আলম।

উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও গবেষক মাহা মির্জা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর–আল–মতিন, ব্যাংকার মামুন রশীদ, আইইউবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এন এন তরুণ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম, লেখক ও উন্নয়ন কর্মী নিশাত সুলতানা, লেখক সুবাইল বিন আলম, লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ, সাংবাদিক আসজাদুল কিবরিয়া, লেখক মিল্লাত হোসেন ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী মোহাম্মাদ ঈসা ইবন বেলাল।

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপস থ ত ছ ল ন প রথম আল র অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ