অক্সফোর্ডে পড়ে চাকরি মেলেনি, যে সিদ্ধান্ত নিলেন যুবক
Published: 8th, July 2025 GMT
চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে বেড়ে ওঠা এক তরুণ দিং ইউয়াংঝু (৩৯)। পড়ালেখায় ভীষণ মেধাবী তিনি। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন ইউয়াংঝু। এরপর পছন্দের চাকরির খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু পছন্দসই চাকরি মেলেনি তার। শেষে এমন এক কাজ খুঁজে নিয়েছেন যা নিয়ে চীনে রীতিমতো আলোচনা তৈরি হয়েছে।
দিং ইউয়াংঝু ফুড ডেলিভারির কাজ করছেন। পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির মতো কঠোর পরিশ্রমের কাজ বেছে নিয়েছেন তিনি। নিজের পরিশ্রমের গল্প সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে নিয়মিত পোস্টও করছেন তিনি। তার উদ্দেশ্যে তরুণদের কাজে উৎসাহ জোগানো। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে।
সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক পাস করেন দিং। এরপর চীনের আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় পিকিং ইউনিভার্সিটি থেকে জ্বালানি প্রকৌশল নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন সিঙ্গাপুরের নানাইয়াং টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে। সবশেষে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববৈচিত্র্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
প্রেমের টানে খুলনায় এসে বিয়ে করলেন চীনা তরুণ
বিড়াল দত্তক নিলে মিলবে ফ্ল্যাট
পড়াশোনা শেষ করে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন ইউয়াংঝু। কিন্তু ওই কাজটি ছিল চুক্তিভিত্তিক। চলতি বছরের মার্চে তার চাকরির চুক্তি শেষ হয়ে যায়। ফলে বেকার হয়ে পড়েন দিং ইউয়াংঝু।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জীবনবৃত্তান্ত পাঠান। একের পর এক চাকরির পরীক্ষা দিতে থাকেন। এভাবে অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠানে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার ডাক পান তিনি। কিন্তু কোথাও ভালো চাকরি মেলেনি।
উপায় না দেখে ইউয়াংঝু সিঙ্গাপুরের একটি ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী হিসেবে নিবন্ধন করেন। আর এটিই নাকি তার স্থায়ী চাকরি।
দিং ইউয়াংঝু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এটা একটা স্থায়ী চাকরি। এই আয় দিয়ে আমি পরিবারকে সাহায্য করতে পারি।’’
সিঙ্গাপুরে কিছুদিন ফুড ডেলিভারির কাজ করে আবার চীনে ফিরে যান এবং সেখানেও একই কাজ শুরু করেন দিং ইউয়াংঝু। বর্তমানে বেইজিংয়ের মেইতুয়ানে একজন ফুড ডেলিভারি কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এটি হলো চীনের একটি শীর্ষস্থানীয় কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।