বাংলাদেশকে নিয়ে তবুও সতর্ক শ্রীলঙ্কা
Published: 13th, July 2025 GMT
জয়াসুরিয়াকে শ্রীলঙ্কা দলের কোচ করা হয়েছিল অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য। আগে-পিছে চিন্তা না করেই কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। প্রথম দিকে তাঁর চেষ্টা ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা দিয়ে কুশল মেন্ডিসদের গড়ে তোলার। কিংবদন্তির নিবেদনে ক্রিকেটাররাও চাঙা হলেন। হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে লিপ্ত হলো শ্রীলঙ্কা। সেই মিশন ছিল ভীষণ বন্ধুর। বাংলাদেশের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না পারা। টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়া নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। তিক্ত সে অতীত পেছনে ফেলে শ্রীলঙ্কা এখন শক্তিশালী একটি দল। টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০ ম্যাচে উন্নতির ছাপ রেখে চলেছে জয়াসুরিয়ার ছোঁয়ায়। বাংলাদেশের বিপক্ষেও উন্নতির প্রমাণ দিচ্ছে দলটি।
সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সাম্প্রতিক টি২০ পারফরম্যান্স মুগ্ধ করার মতোই, যেটা র্যাঙ্কিংয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে সপ্তম স্থান দখলে রেখেছে তারা। বাংলাদেশ সেখানে পেছনে পড়ে আছে। ছয় ম্যাচ ধরে জয়ের মুখ দেখছেন না লিটন কুমার দাসরা। তাদের বিপক্ষে আজও তাই জয়ের প্রত্যাশা স্বাগতিকদের। শ্রীলঙ্কার ফিল্ডিং কোচ উপুল চন্দনা ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পাল্লেকেলেতে দারুণ একটি ম্যাচ খেলেছি। কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাঙ্কা দুর্দান্ত ছিল। সুন্দর একটা শুরু দিয়েছিল। তিন বিভাগেই ভালো ক্রিকেট খেলা সম্ভব হয়েছে। কালকের ম্যাচেও আমরা জিততে চাই।’
এই যে তিন অলআউট ক্রিকেট খেলেছে শ্রীলঙ্কা, এর পেছনের কারিগর জয়াসুরিয়া। সাদামাটা একটি দলকে যিনি তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন প্রেরণা দিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব নেই, তখন কোচিং অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে কীভাবে কাজটি করতে হয় জানতাম। ট্রিপিক্যাল কোচদের মতো করেই যে কাজটি করতে হবে, তা না। আমি চেষ্টা করেছি ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করতে। ক্রিকেটারদের সব সময় একটা কথাই বলি, তোমরা বিশ্বের সেরা ক্রিকেটার। একাগ্রতা ও চেষ্টা দিয়ে এই পর্যায়ে এসেছ। একটি দলকে ভালো জায়গায় নিতে হলে কোচের মোটিভেট করার ক্ষমতা থাকতে হবে।’
তিনি জানান, শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা নিজেদের প্রয়োজনেই ভালো খেলছে। আজকের ম্যাচেও জয়ের ধারাবাহিকতা দেখতে চান তিনি। ডাম্বুলা থেকে সিরিজ জিতে রাজধানী কলম্বোতে ফিরতে চান। লঙ্কান কোচ জানেন, সিরিজে ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ সহজে ছাড় দেবে না। ফিল্ডিং কোচ বলেন, ‘তারা ভালো দল। সিরিজে সমতা আনতে কঠিনভাবে ফেরার চেষ্টা করবে। আমরা চেষ্টা করব আগের ম্যাচের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি