সামিয়া রহমান থাকেন রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্প–সংলগ্ন নদ্দাপাড়া এলাকায়। তিনি বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ক্লাস শুরু হয় সকাল ৯টায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার একমাত্র পথ দক্ষিণখানের আশকোনা হজ ক্যাম্প সড়ক।
সামিয়া বলেন, বিমানবন্দর আন্ডারপাসের নির্মাণকাজে হজ ক্যাম্প সড়ক এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ। নদ্দাপাড়া সড়কটিতে বড় বড় গর্ত। বিকল্প সড়ক হিসেবে ‘কাওলা সড়ক’ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কিন্তু ওই সড়কও এই বর্ষায় চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। তাই প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আশকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশকোনা হজ ক্যাম্প ও নদ্দাপাড়া সংযোগ সড়কগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয় না।গত রোববার আশকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশকোনা হজ ক্যাম্প, নদ্দাপাড়া ও কাওলা সড়ক সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি সড়ক খানাখন্দে ভরা। কোথাও পিচঢালাই আছে, কোথাও নেই। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। তাতে প্রায় প্রতিদিন উল্টে পড়ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, আহত হচ্ছে যাত্রীরা। কাদাপানি ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই সব এলাকায় ছয় থেকে সাত লাখ মানুষ বসবাস করে। আন্ডারপাসের নির্মাণকাজের জন্য আশকোনা হজ ক্যাম্প সড়কটি বন্ধ। কিন্তু ভেতরের অলিগলির রাস্তাগুলোও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
বিমানবন্দর আন্ডারপাস নির্মাণকাজের কারণে বন্ধ হয়ে আছে হজ ক্যাম্প সড়ক। গতকাল রাজধানীর আশকোনা হাজ ক্যাম্প এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হজ ক য ম প স নদ দ প ড় র আশক ন
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে এপ্রোচ সড়কে পানি, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
সোনারগাঁয়ের মঙ্গলের গাঁও বটতলা এলাকায় কালভার্ট ব্রীজ নির্মাণে ধীরগতিতে এপ্রোচ সড়কে পানি উঠে ভোগান্তিতে চলাচল করছে ২০গ্রামের সাধারণ মানুষ।
মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে হোসেনপুর সড়কে পুরাতন ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলে সড়ক বন্ধ করায় বিকল্প এপ্রোচ সড়ক নিচু করে নির্মাণের ফলে এ ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।
এ সড়কে চলতে গিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও ব্যটারি চালিত রিক্সা উল্টে গত এক মাসে প্রায় অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ ও শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এপ্রোচ সড়কটি উচু করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানিয়েছের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী।
জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে হোসেনপুর বাজার সড়কের মঙ্গলেরগাঁও বটতলা এলাকায় ২ কোটি ১৮ লক্ষ ১ হাজার ৭শ ৭২ টাকা ব্যয়ে মেসার্স খাজা চিশতিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়।
কার্যাদেশ পাওয়ার পর ২০২৪ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কালভার্ট নির্মাণ কাজ শুরু করেন। চলতি বছরের ৩১ আগষ্ট শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারনে প্রায় ৬০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেননি।
তবে কালভার্ট নির্মাণ করতে গিয়ে জন সাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে বিকল্প এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ এপ্রোচ সড়কটি নিচু করে নির্মাণ করায় বর্তমানে পানির নিচে তলিয়ে যায়। তবে বৃষ্টি হলে হাটু পানিতে তলিয়ে থাকে সড়কটি।
ফলে ওই এলাকার মঙ্গলেরগাঁও, দুধঘাটা, পাঁচআনি, চরগোয়ালদী, দূর্গা প্রসাদ, চৌধুরী গাঁও, কাজিরগাঁও, তাতুয়াকান্দি, এলাহী নগর, রামগোবিন্দেরগাঁও, হোসেনপুর, একরামপুর, দড়িগাঁও, মনারকান্দি, ফরদি ও ফতেপুরসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। গত এক মাসে এ সড়কে চলতে গিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও ব্যটারি চালিত রিক্সা উল্টে অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ ও শিক্ষার্থী আহত হন।
তাতুয়াকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিকল্প এপ্রোচ সড়কটি নিচু করে নির্মাণ করায় বেশিরভাগ সময়েই পানির নিচে তলিয়ে থাকে। পাশাপাশি সড়কে খানাখন্দ হয়ে গাড়ি উল্টে মানুষ আহত হচ্ছেন। প্রশাসনের কাছে একাধিকবার জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।
দুধঘাটা গ্রামের আশরাফুল আলম জানান, সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারনে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। প্রতিদিন কোন না কোন গাড়ি উল্টে মানুষ আহত হচ্ছেন। দ্রুত সড়কটি উচু করে নির্মাণের দাবি করেন তিনি।
সোনারগাঁ সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সানিকা আক্তার জানান, তিনি অটোরিক্সা উল্টো আহত হয়েছেন। এ সড়কে চলাচল করতে গেলে তিনি এখনো ভয়ে আঁতকে উঠেন।
চৌধুরীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, কালভার্ট নির্মাণের পাশাপাশি এপ্রোচ সড়কটি সংস্কার হওয়া জরুরি। সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খাজা চিশতিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী তমাল ঘোষ জানান, কিছু জটিলতার কারনে কাজ শেষে করতে পারেননি। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার কারনে এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাস্তা উচু করতে হলে তিনি করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী জানান, নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এপ্রোচ সড়কটি উচু করার জন্য ইতোমধ্যে ভেকু নেওয়া হয়েছে। তিনিও ভূক্তভোগী বলে জানিয়েছেন।