তানোরে চুরি হওয়া ১১ লাখ টাকা মাটি খুঁড়ে উদ্ধার
Published: 31st, July 2025 GMT
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে চুরি হয়ে যাওয়া প্রায় ১১ লাখ টাকা। এসব টাকা চুরির অভিযোগে আরজেদ আলী ওরফে কুরহান (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার জোড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে কুরহানের বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে টাকার ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেই কুরহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। টাকা উদ্ধারের পর বুধবার বিকেলে কুরহানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রাজশাহী নগরের শিরোইল মঠপুকুর এলাকার বাসিন্দা মাবিয়া খাতুন জমি বিক্রি করতে গত সোমবার তানোর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যান। সঙ্গে ছিল জমি বিক্রির ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অফিসে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় মাবিয়া খাতুন তার টাকার ব্যাগটি চেয়ারের পাশে রাখেন। এ সুযোগে কৌশলে ব্যাগটি নিয়ে সটকে পড়ে কুরহান।
মোবাইল ফোনে কথোপকথন শেষে ব্যাগটি না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন মাবিয়া খাতুন। এতে পুরো অফিসজুড়ে হইচই পড়ে যায়। পরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি ব্যাগ নিয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছে। ঘটনার দিনই মাবিয়া খাতুন তানোর থানায় অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতে পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে চোর শনাক্ত করে। মঙ্গলবার রাতেই কুরহানকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশকে কুরহান জানিয়েছেন, ব্যাগটি চুরি করে কাউকে কিছু না বলে তিনি বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে তা পুঁতে রাখেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে টাকা খরচের পরিকল্পনা ছিল তার। তবে, এত দ্রুত ধরা পড়বেন, সেটা ভাবেননি।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, কুরহান চুরির কথা স্বীকার করলে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাড়ির পেছনের মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় ব্যাগভর্তি টাকা। আদালতের অনুমতি নিয়ে এই টাকা মালিক মাবিয়া খাতুনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/কেয়া/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]