রূপগঞ্জে ঈদগাহ মাঠে ‘মেলা’ আয়োজন ঘিরে উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশঙ্কা
Published: 4th, August 2025 GMT
রূপগঞ্জে ঈদগাহ মাঠে বাণিজ্যিক বিনোদনমূলক মেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে ফুসে উঠেছে স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসী। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা মুসল্লিদের মানববন্ধন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি।
দীর্ঘদিনের ধর্মীয় পবিত্রতার প্রতীক দড়িকান্দি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে গান-বাজনা, আনন্দমেলা আর অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষদের মাঝে নেমে এসেছে চরম ক্ষোভ। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বলছেন এই পবিত্র স্থানে মেলা নয়, যেন চলছে ধর্মের উপর প্রকাশ্য আঘাত।
ঈদগাহের পবিত্রতা রক্ষায় অবিলম্বে মেলা বন্ধ ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে শুক্রবার (১ আগস্ট) জুমার নামাজের পর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেছে শতাধিক মুসল্লি ও স্থানীয় এলাকাবাসি। এসময় দ্রুত মেলা বন্ধের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃক্ষ মেলা নাম দিয়ে প্রচার চালানো হলেও পহেলা আগস্ট মাঠে শুরু হয় তথাকথিত “রূপগঞ্জ কৃষি ও কুটির শিল্প মেলা। অথচ ভিতরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র না আছে কৃষি, না আছে কুটির শিল্প। চোখে পড়ে বাহারি সাজসজ্জা, বেপরোয়া গান-বাজনা, উচ্ছৃঙ্খল যুবক-যুবতী, প্রেমিক যুগলের অবাধ বিচরণ এবং দোকানপাটে চলছে বাণিজ্যিক বিনোদনের নামে নানা অপকর্ম।
স্থানীয়রা বলেন, এমন পরিবেশ শুধু ঈদগাহের পবিত্রতাকেই অপমান করছে না, বরং ইসলামি সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধকেও চরমভাবে ক্ষুণ্ন করছে।
মেলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আগে এক মুসল্লির জানাজা অনুষ্ঠিত হয় পাশের মাদ্রাসা মাঠে। ঈদগাহ দখল থাকায় মুসল্লিদের স্থান সংকট ও বিশৃঙ্খলার শিকার হতে হয়। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপস্থিত জনতা।
অভিযোগ রয়েছে, এই মেলার জন্য কোনো বৈধ অনুমতি নেই। তবুও একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছে আয়োজকরা। মেলার পেছনে উপজেলার শ্রমিক দলের আহ্বায়ক কনক ও তার অনুসারীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করা হলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠবে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অবিলম্বে মেলা বন্ধ করে মাঠের পবিত্রতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
এই ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু বলেন, ঈদগাহে মেলার ব্যাপারে কনক নামে এক ব্যক্তি আমার কাছে এসেছিলো । কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ঈদগাহ্ মাঠে মেলা হবে শুনে আমি কোন সমর্থন করিনি মেলার সাথে আমি এবং আমার দলের জড়িত না। কেউ যদি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে করে থাকে তাহলে এই বিষয়ে আমার জানা নেই।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, মেলার অনুমতির জন্য আমার কাছে আবেদন নিয়ে আসছিল কনক নামে এক ব্যক্তি।
আমি আবেদনটি জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে মেলা বন্ধের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী ও মুসল্লীরা মানববন্ধন করেছে বলে আমি শুনেছি বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ঈদগ হ ম ঠ এল ক ব স র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দর উপজেলাকে নারায়নগঞ্জ-৩ অন্তর্ভুক্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনকে নির্বাচন কমিশন দ্বারা ২ ভাগে (সিটি কর্পোরেশন ও বন্দর উপজেলা) বিভক্ত করে বন্দর উপজেলাকে সোনারগাঁয়ে অন্তর্ভূক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ২টায় বন্দর উপজেলা চত্তরে বন্দরবাসী আয়োজনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তরা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নসহ নির্দিষ্ট কয়েকটি ওয়ার্ড একত্রে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি প্রশাসনিক, ভৌগোলিক এবং জনসংখ্যার দিক থেকে যথার্থ ও কার্যকর একটি সীমানা ছিল। কিন্তু এবার যে প্রস্তাবনা প্রকাশ করা হয়েছে, তা অখণ্ডতা নষ্ট করে এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী।
বক্তারা আরও বলেন, বন্দর উপজেলা একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশাসনিক এলাকা। এর পূর্বে ব্রহ্মপুত্র এবং পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদী দ্বারা এটি প্রাকৃতিকভাবে বিভক্ত ও সুনির্দিষ্ট একটি অঞ্চল। এই ধরনের ঐতিহাসিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক ভিত্তিকে উপেক্ষা করে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হলে জনগণ ভোগান্তির শিকার হবে এবং প্রশাসনিক সেবা ব্যাহত হবে। জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১ এর ধারা ৬(২) অনুযায়ী আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রশাসনিক সুবিধা বিবেচনায় নেওয়ার কথা থাকলেও এই খসড়ায় তা মানা হয়নি। বরং কমিশনের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ঘ, ঙ, জ, ঞ, ট ক্রমিকের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটেছে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানান, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত সীমানা পুনর্বিবেচনা করে বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন আগের মতোই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বহাল রাখার। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি লিখিত আপত্তিপত্র দাখিল করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সাবেক সহ সভাপতি হাজী নূর উদ্দিন আহাম্মেদ এর সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি সদস্য এডঃ শিপলু, শহিদুল ইসলাম রিপন,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বন্দর থানা শাখার নেতা আবির,বন্দর পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের সিনিয়র সাংবাদিক সাব্বির আহাম্মদে সেন্টু, নাগরিক ঐক্য বন্দর থানা শাখার সভাপতি মাহাবুব চৌধুরী, বন্দর থানা বিএনপি নেতা নূর মোহাম্মদ পনেছ, মেজবা উদ্দিন স্বপন, মোঃ সেলিম মিয়া, হাবিব মেম্বার, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুল,বন্দর থানা বিএনপি নেতা ফারুক চৌধুরী, বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আমির হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলী নওশাদ তুষার, বন্দর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম প্রমুখ।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক ঐক্য বন্দর থানা শাখার সভাপতি বন্দর উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, বিএনপি নেতা শহীদ মেম্বার,কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সাধারন সম্পাদক ফরিদ হোসেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোজাম্মেল, আশাবুদ্দিন, সোহেল, পোকন, বন্দর থানা যুবদল নেতা কাজী সোহাগসহ বন্দরে সর্বস্তরের সাধারন জনগন।