সম্পূরক বৃত্তি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নীতিমালা এবং সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দুই দফা দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (২৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় জবি শিক্ষার্থীদের।

আরো পড়ুন:

৩ দাবিতে ববি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

কুবিতে সিদ্ধিদাতা গণেশের বন্দনা

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রশাসন জকসু নীতিমালা সিন্ডিকেটে অনুমোদন দিলেও নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, তফসিল এবং স্পষ্ট রোডম্যাপ এখনো প্রকাশ করেনি। পাশাপাশি সম্পূরক বৃত্তি প্রসঙ্গেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পরিষ্কার ব্যাখ্যা মেলেনি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে।

এদিন শাখা ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, আপ বাংলাদেশ এবং ইসলামিক ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জবি শাখার মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, “আমরা আমাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত সম্পূরক বৃত্তি নিয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ব্যাখ্যা পাইনি। আবার জকসু নিয়েও তারা সুস্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ দিতে পারেনি। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”

জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “প্রশাসন গতকাল সিন্ডিকেটে জকসুর নীতিমালা অনুমোদন করেছে। কিন্তু আইন, তফসিল ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। সম্পূরক বৃত্তির ব্যাপারেও তারা চুপ রয়েছে।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জবি শাখার সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “দীর্ঘদিন আন্দোলন করার পরও আমাদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি। এমনকি কবে হবে তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

গেইল-পেরেরাদের পারিশ্রমিক, হোটেল বিল না দিয়েই লিগের আয়োজকেরা পালিয়েছেন

টুর্নামেন্টের নাম ইন্ডিয়ান হেভেনস প্রিমিয়ার লিগ বা আইএইচপিএল। ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরে আয়োজিত টুর্নামেন্টটি ক্রিস গেইল, থিসারা পেরেরাদের জীবনে নিয়ে এসেছে মহা বিড়ম্বনা। বিশ্ব ক্রিকেটের নামি এই খেলোয়াড়দের হোটেলে রেখে শহর থেকে পালিয়ে গেছেন লিগের আয়োজকেরা। খেলোয়াড়, ম্যাচ কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি, পরিশোধ করা হয়নি হোটেলের বিলও।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে। গত ২৫ অক্টোবর আট দল নিয়ে শুরু হওয়া আইএইচপিএল শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর। কিন্তু শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয়, কারিগরি কারণে দিনের খেলা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রোববার সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতে শ্রীনগর ছেড়ে চলে গেছেন।

হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়োজকদের কাছ থেকে তারা কোনো বিল পায়নি। সেই সময় প্রায় ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকা পড়েছিলেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার আইএইচপিএলে আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন। শ্রীনগরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আয়োজকেরা হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা হোটেল, খেলোয়াড় বা আম্পায়ার কারও বিল পরিশোধ করেননি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি যেন সবাই বেরিয়ে যেতে পারে।’

শ্রীনগরের যে হোটেলে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আয়োজকেরা ১০ দিন আগে খেলোয়াড়দের জন্য ১৫০টি কক্ষ চেয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, ক্রিস গেইলের মতো তারকার কারণে কাশ্মীরের পর্যটন উপকৃত হবে। কিন্তু রোববার সকালে দেখি তাঁরা উধাও হয়ে গেছেন। আমাদের বিলও দেননি। গেইলসহ কয়েকজন খেলোয়াড় শনিবারই হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন।’

গেইল ছাড়াও টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, নিউজিল্যান্ডের জেসি রাইডার, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি এবং ওমানের আয়ান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুর্নামেন্টের প্রচারণায় যে সব পোস্টার ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটিতে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের ছবিও বড় আকারে দেখা গেছে।

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার পারভেজ রসুল এই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। তিনি জানান, কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় হোটেলে আটকা পড়েছিলেন। পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা বেরিয়ে যান, ‘এক ইংলিশ আম্পায়ার হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছিলেন’।

স্থানীয় এক ক্রিকেটার জানান, আয়োজকেরা সম্ভবত ধারণাই করতে পারেননি এমন একটি টুর্নামেন্ট চালাতে কত বড় বাজেট প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে স্পনসররা সরে যাওয়ায় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছিল, ‘প্রথম দিন নির্ধারিত পোশাকও ছিল না, স্থানীয়ভাবে কিনে আনা হয়েছিল। কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গেও লিখিত চুক্তি করা হয়নি।’

টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল যুবা সোসাইটি মোহালি নামের একটি সংস্থা। সহযোগিতায় ছিল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্পোর্টস কাউন্সিল। কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানান, আইএইচপিএল সভাপতি আশু দানি পুলিশের ছাড়পত্র ও মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন, ‘তারা আমাদের টাকা দিয়েছে। এখানে সরকারের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই। কেন লিগ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেল, আমরা জানি না।’

তবে ২২ অক্টোবরের একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাগীয় কমিশনার অংশুল গার্গের সভাপতিত্বে আইএইচপিএল নিয়ে এক প্রস্তুতি সভার কথা উল্লেখ ছিল, যেখানে অনুমান করা হয়েছিল বকশি স্টেডিয়ামে ২৫–৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে দর্শক উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। টিকিটের দাম কমিয়েও সাড়া মেলেনি।

এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ