ট্রফি হাতে যাঁকে দেখেন, তিনিও কিন্তু একজন মানুষ
Published: 12th, January 2025 GMT
ছেলেবেলার একটা শিক্ষা আজও মনে গেঁথে আছে।
বয়স তখন সম্ভবত ১২। মাছ ধরতে খুব ভালোবাসতাম। আর ভালোবাসতাম সাগর। যেহেতু ম্যালোর্কায় বড় হয়েছি, সাগর আসলে জীবনের অংশ ছিল। সাগরপাড়ের বড় বড় পাথরের ওপর পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে বসে থেকে, নৌকায় ঘুরে বেরিয়ে একটা অদ্ভুত শান্তি লাগত। মনে হতো সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি।
একদিন প্রশিক্ষণ বাদ দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছি। যা হওয়ার তা-ই হলো, পরদিন ম্যাচে হার। মনে আছে, গাড়িতে বাড়ি ফেরার সময় কাঁদছিলাম। পাশেই ছিলেন এক চাচা। আমার ওপর সব সময় তাঁর বেশ প্রভাব ছিল। তাঁর মাধ্যমেই টেনিসের প্রতি ভালোবাসা। তিনি বলছিলেন, ‘আরে বোকা, কিচ্ছু হয়নি। এটা তো স্রেফ একটা ম্যাচ। এখন কেঁদে লাভ হবে? যদি মাছ ধরতে চাও, ধরো। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যদি জিততে চাও, তাহলে সেটাই তোমার করতে হবে, যা করা উচিত।’ এই শিক্ষাটা আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজও প্রায়ই কথাটা কানে বাজে।
খেলাধুলার ক্ষেত্রে ছোটবেলায় আমার সামনে কোনো আইডল ছিল না। ম্যালোর্কানদের চরিত্রই আসলে এমন। আশপাশে যাঁদের দেখতাম, আমার কাছে তাঁরাই ছিল নায়ক। কিন্তু ১২ বছর বয়সে প্রথম কার্লোস ময়ার সঙ্গে খেলার সুযোগ হয়। তিনিও ম্যালোর্কারই বাসিন্দা। ফ্রেঞ্চ ওপেনে সে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। প্রথম স্প্যানিশ খেলোয়াড় হিসেবে ১ নম্বরে উঠে আসার কৃতিত্বও তাঁর। তাঁর সঙ্গে খেলতে পারাটা একটা অভাবনীয় অভিজ্ঞতা। আমার জন্য তিনি ছিলেন বাইরের পৃথিবীটা দেখার একটা জানালা। তাঁর সঙ্গে খেলার পরই টেনিসটা ‘মজার খেলা’ থেকে জীবিকা বা জীবনের লক্ষ্য হয়ে ওঠে। টেনিস নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।
আরও পড়ুনসবাই আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে, এমন জীবনই তো বেছে নিয়েছি২৪ নভেম্বর ২০২৪ব্যথা আদতে সবচেয়ে বড় শিক্ষক.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’