গাজীপুরে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসককে অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন
Published: 12th, January 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে অপহরণের ৯ ঘণ্টা পর আমিনুর রহমান (৪০) নামের এক চিকিৎসক মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মাওনা চৌরাস্তায় মহাসড়কের পাশ থেকে তাঁকে অপরহণ করা হয়। আজ রোববার ভোরে গাজীপুরের হোতাপাড়া ও রাজেন্দ্রপুরের মাঝামাঝি স্থানে তাঁকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।
আমিনুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায়। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অপহরণকারীরা কয়েক দফায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে মারধর করে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা, দুটি স্মার্টফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়েছে অপহরণকারীরা। ছাড়া পাওয়ার পর আমিনুর রহমানকে চিকিৎসার জন্য আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
আমিনুর রহমানের চাচাতো ভাই সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় একটি ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করেন আমিনুর। গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে তিনি শ্রীপুরে যান। ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁকে মাওনা চৌরাস্তায় মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় অপহরণ করা হয়। তাঁর মুঠোফোন নম্বর থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। কথা বলা অবস্থায় তাঁকে মারধর করা হচ্ছিল। রাত ১১টা পর্যন্ত তিন দফায় মোট এক লাখ টাকা অপহরণকারীদের পাঠানো হয়েছে। কিছুক্ষণ পরপর অপহরণকারীরা টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত আরও ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। আজ ভোর ৪টার দিকে আহত অবস্থায় তাঁকে গাজীপুরের হোতাপাড়া ও রাজেন্দ্রপুরের মাঝামাঝি একটি স্থানে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয় অপহরণকারীরা।
আমিনুর রহমানের স্ত্রী মোসা লুনা বলেন, অপহরণকারীরা তাঁর স্বামীকে মারধর করছিল। বারবার কান্না শুনিয়ে মুক্তিপণের টাকা দিতে চাপ দিচ্ছিল তারা। অপহরণের বিষয়ে তাঁরা শ্রীপুর থানা ও র্যাবকে জানায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল আজ সকাল সোয়া ৯টায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই চিকিৎসকের পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণের ঘটনা জানানো হয়েছিল। আমরা তাঁর মুঠোফোনের অবস্থান তিনটি জায়গায় শনাক্ত করেছিলাম। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান শুরু হয়েছিল। পরে ওই চিকিৎসক বাসায় ফিরেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
বাড়ির ভেতর ঢুকে বাবা-মাকে মারধরের পর এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের বেপারীপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। বিকেল ৫টার দিকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও মূল অভিযুক্ত আটক করে পুলিশ।
অভিযুক্ত সঞ্চয় (২০) উপজেলার ফাঁসিতলা এলাকার মোঘলটুলী গ্রামের রাফিউল ইসলাম রাফির ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরেন ওই শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর সঞ্চয়সহ ১৫-২০ জন লাঠি নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং মালামাল লুট করে। এসময় বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে মারধর ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তারা শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে চালক-হেলপারকে মারধর করে তেলবাহী ট্রাক ছিনতাই
সিরাজগঞ্জে সহপাঠীদের মারধরে আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
পুলিশ বিকেল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী কামারদহ ফেলুপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে চাঁন মিয়ার বাড়ি থেকে অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। এসময় অভিযুক্ত সঞ্চয়কে আটক ও তার কাছে থাকা মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিলেন সঞ্চয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্চয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালায়। একটি বাড়ি থেকে শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত সঞ্চয়কে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ