সমালোচক পুরস্কারের জন্য আবেদন আহ্বান
Published: 12th, January 2025 GMT
শুরু হয়ে গেছে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৪–এর কার্যক্রম। চলছে তারকা জরিপের ভোট গ্রহণ। এবার সমালোচক পুরস্কারের জন্য আবেদন আহ্বান করা হচ্ছে। অনলাইনে https://services.prothomalo.com/mpaward/critics-award.php ঠিকানায় আবেদন করতে হবে। অংশগ্রহণকারী পরিচালক বা প্রযোজক বা কাজসংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি এই ঠিকানায় গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করে কাজ জমা দিতে পারবেন। এবারও তিনটি বিভাগে দেওয়া হবে পুরস্কার: পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র/চলচ্চিত্র, সীমিত দৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র/নাটক, ওয়েব সিরিজ।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী—এ চার শাখায় দেওয়া হবে সমালোচক পুরস্কার (পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র/চলচ্চিত্র)। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সিনেমা হলে প্রথমবারের মতো মুক্তি পাওয়া কাহিনিচিত্র এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রথমবারের মতো স্ট্রিম হওয়া ওয়েব ফিল্ম থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। কাহিনিচিত্রের দৈর্ঘ্য অবশ্যই ৮০ মিনিটের বেশি হতে হবে।
শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী—এ চার শাখায় দেওয়া হবে সমালোচক পুরস্কার (সীমিত দৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র/নাটক)। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন টেলিভিশিন চ্যানেল ও অনলাইনে প্রথমবার মুক্তি পাওয়া নাটক, টেলিছবি, ওয়েব কনটেন্ট থেকে দেওয়া হবে এই পুরস্কার। নাটক, টেলিছবি ও ওয়েব কনটেন্টের দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ৭৯ মিনিট।
শ্রেষ্ঠ ওয়েব সিরিজ, শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী—এই পাঁচ শাখায় দেওয়া হবে সমালোচক পুরস্কার (ওয়েব সিরিজ)। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রথমবারের মতো স্ট্রিম হওয়া ওয়েব সিরিজ থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। ওয়েব সিরিজের মোট দৈর্ঘ্য অবশ্যই ৭০ মিনিটের বেশি হতে হবে এবং ন্যূনতম পর্বসংখ্যা ৩ (তিন) হতে হবে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহী পরিচালক বা প্রযোজককে ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করে কাজ জমা দিতে হবে। আবেদন ফরমের নির্ধারিত বক্সে কাজের ইউটিউব লিংক/গুগল ড্রাইভ লিংক/অনলাইন প্লাটফর্ম লিংক দিতে হবে। অন্যথায় আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। কাজ জমা দেওয়ার শেষ সময় ৩১ জানুয়ারি ২০২৫।
শুধু বাংলাদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীরা এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান
গণগ্রেপ্তার, নির্যাতন–নিপীড়ন–হয়রানি চলছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ক তখনো আটক ছিলেন ডিবি কার্যালয়ে। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারি উদ্যোগে লোকদেখানো ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ পালন করা হচ্ছিল ৩০ জুলাই। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের এই কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করে সেদিন ‘মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং তা অনলাইনে প্রচারের কর্মসূচি’ পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এই কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমর্থনে ২৯ জুলাই রাত (২০২৪ সাল) থেকেই ফেসবুকের প্রোফাইলে লাল রঙের ফ্রেম ব্যবহার শুরু হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, লেখক, সাংবাদিক, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানান।
ফেসবুকে অভূতপূর্ব সাড়ার পাশাপাশি নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ৩০ জুলাই দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস ও সড়কে মিছিল করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকার করা রিটের শুনানিতে ৩০ জুলাই হাইকোর্ট মন্তব্য করেন ‘এসব মৃত্যু আমাদের সবার জন্যই দুঃখজনক’।
সেদিন দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা)। অধ্যাপক আসিফ নজরুল (বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা), টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকারকর্মী
শিরীন হক, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর যে মাত্রায় বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা দেশের জনগণ ও বিশ্ববিবেককে স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে।’
অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ দেওয়া ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ৩০ জুলাই বিবৃতি দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গণ–অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলো সম্পর্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের (বর্তমানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক) চলতি জুলাই মাসের ৬ তারিখ রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ২৯ জুলাই (২০২৪ সাল) সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় শোক এবং কালো ব্যাজ ধারণের ঘোষণা দেওয়ার পর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। নাছির উদ্দীন তাঁকে রাষ্ট্রীয় কালো ব্যাজের বিপরীতে লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাব দেন। পরে মো. আবু সাদিক কায়েমকে (ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা) ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন আবদুল কাদের। সাদিকও সম্মতি দেন। নাছির উদ্দীন ও আবু সাদিকের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেই মুখে–চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা ও তা অনলাইনে প্রচার করার কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছিল।