১. দেড় বছরের যুদ্ধ

২০২২-২৩ সেশনে মেধা তালিকায় নাম এলেও খুব অল্পের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি হতে পারিনি। সেই ব্যর্থতা আমাকে হতাশায় ডুবিয়েছিল। ধীরে ধীরে নতুন করে উঠে দাঁড়ানোর সাহস সঞ্চয় করি। ‘সেকেন্ড টাইমার’ হিসেবে পুরোনো বই দিয়েই প্রস্তুতি শুরু করি। প্রতিদিনের প্রস্তুতিতে পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছি।

২.

প্রশ্নের ধরন বুঝে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিশ্লেষণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নের ধরন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ভিন্ন। তাই বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো চিহ্নিত করি। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণজ্ঞানসহ প্রতিটি বিষয়ের কমন বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিই। বিষয়ভিত্তিক পড়ার পাশাপাশি প্রতিদিন যতটা সম্ভব প্রশ্ন সমাধান করতাম। নিজে নিজের মডেল টেস্ট নিতাম।

আরও পড়ুনপরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ, তাই হাতে হিসাব করার চর্চা করতাম৭ ঘণ্টা আগে৩. কোচিং ছাড়াই প্রস্তুতি

কোচিং বা টিউশনের দিকে না গিয়ে আমি অনলাইনে ফ্রি ক্লাস থেকে সহায়তা নিয়েছি। নিজস্ব রুটিন বানিয়ে পড়াশোনা করেছি। নির্ভর করেছি পুরোনো বইয়ের ওপর। পড়ার মধ্যে থেকে নিয়মিত রিভিশন এবং পরীক্ষা দিয়ে প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করেছি।

৪. আত্মবিশ্বাস ও জেদ

‘জাবিতে একটা আসন লাগবেই’—এই জেদ নিয়ে প্রতিদিন এগিয়েছি। পরীক্ষার সময় নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ফলাফল ঘোষণার সময় যখন একে একে মেধাক্রম আসতে শুরু করল, আশাবাদী হলেও চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাস ছিল না। অবশেষে ই ইউনিটে প্রথম হয়েছি। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

৫. ধৈর্যের ফল

আমি যেহেতু ‘সেকেন্ড টাইমার’ ছিলাম, তাই প্রস্তুতির জন্য একটা লম্বা সময় পেয়েছি। আবার এ কথাও সত্যি, এত লম্বা সময় ধৈর্য ধরে রাখা কঠিন। তবে সব সময় চেষ্টা করেছি, ধৈর্য যেন না হারাই। এই দীর্ঘ প্রস্তুতির পথচলায় আমি শিখেছি, ধৈর্য আর আত্মবিশ্বাস থাকলে সাফল্য ধরা দেয়। সবকিছুর জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচারিত ডকুমেন্টরিতে ফুটেজ না থাকায় এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হট্টগোল করা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে এ হট্টগোল করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জুলাই শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দিল জাবি

জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে ওই ছাত্রদল নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, “এই‌ ডকুমেন্টরিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলন মাঠে ছিলাম, জেল-জুলুম, মামলা আমরাও খেয়েছি।”

এ সময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিমকেও হট্টগোল করতে দেখা যায়।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের জন্য তাদের দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট ও‌ সময় না পাওয়ায় তাদের পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টরি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

তবে এ ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।

তারা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের পূর্বে তারা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পাঠানো ও সাংবাদিকদের থেকে সংগৃহীত ছবি ও ফুটেজ দিয়ে ডকুমেন্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি দাবি করেছেন তার ছবি বা ফুটেজ দেয়া হয়নি, তার ছবি বা ফুটেজ তাদের কাছে কেউ দেয়নি। এজন্য তারা ডকুমেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি?

এ নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজ যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪ এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে। ঠিক একইসঙ্গে প্রতিবাদের যে ভাষা, সেখানেও শিক্ষিত হবার প্রয়োজন রয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসা ও পূজার পার্থক্য শিখবে ও বুঝবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল
  • রংপুরে হিন্দুপাড়ায় হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল