বাংলাদেশে এক রোগীর শরীরে এইচএমপি ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য জানানো হয় এবং এরপর সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যার মাধ্যমে এই ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য সতর্কতা ঘোষণা করা হয়।

চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং তীব্রতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত

ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে করণীয়

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। এছাড়া যারা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে (COPD) আক্রান্ত, গর্ভবতী নারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। চীনসহ অন্যান্য দেশে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায়, বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি বলে সতর্ক করা হয়েছে।

সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে:
১.

শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে নিজেকে রক্ষায় মাস্ক ব্যবহার করুন।
২. হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় নাক ও মুখ গামছা বা টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখুন।
৩. ব্যবহৃত টিস্যু দ্রুত ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হাত ধুতে সাবান পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৪. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকুন এবং তাদের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
৫. ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)। 
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করবেন না। ৭. আপনি যদি জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন, তবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন এবং প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করেছে এবং তাদের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) ইউনিট পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, ‘হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়, তবে এটি শুধু চীনে নয়, পৃথিবীর নানা দেশে পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর উপস্থিতি আগে থেকেই ছিল, তাই এটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়।’ 

তিনি আরো জানান, আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।

ঢাকা/হাসান/আসাদ/সাইফ

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ