অঞ্জনার সম্পত্তির দলিল-ব্যাংকের চেকসহ কাগজপত্র গেল কই?
Published: 12th, January 2025 GMT
না ফেরার দেশে চলে গেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। চিকিৎসায় অবহেলাসহ আরও কিছু কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত অভিনেত্রীর কাছের কয়েকজন শিল্পী অভিযোগ তুলেছিলেন। এক্ষেত্রে অঞ্জনার পালিত ছেলে নিশাত মনিকে সন্দেহও করেছেন অনেকে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চিত্রনায়ক ও শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ডিএ তায়েবকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করল সংগঠনটি। আগামী তিন দিন পর তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
রোববার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উদ্যোগে সদ্য প্রয়াত শিল্পী অঞ্জনা রহমান ও প্রবীর মিত্রের মাগফেরাতের জন্য মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে অঞ্জনার ছেলে (পালিত) নিশাত মনির উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিয়ে আলোচনায় বসে শিল্পী সমিতির নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, অভিনেতা ডিএ তায়েব, সুব্রত, সনি রহমান, অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম মুক্তি, অঞ্জনা রহমানের বোন রঞ্জনা ও পালিত মেয়ে জামাই কামরুল আলম রিপনসহ আরও অনেকে।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিপ্লব শরীফ, নাহিদা আশরাফ আন্না, রুমানা ইসলাম মুক্তি ও ইউসুফ খান।
আলোচনা শেষে শিল্পী সমিতির মুখপাত্র ডিএ তায়েব বলেন, ‘সদ্যপ্রয়াত চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমানের মৃত্যু নিয়ে নানা ধরণের কথা আসছে। কেউ বলছে অঞ্জনা আপার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আবার কেউ বলছে তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ আমরা বসেছি। আমাদের কাছে অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনার অভিযোগ এসেছে। সেজন্য শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে আমরা একটি ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আগামী তিন দিনের মধ্যে আমাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের আলোচনার সময় চিত্রনায়ক আলমগীর ও রঞ্জনা কয়েকটি প্রশ্ন করেছে মনিকে করেছেন। আমরা জানতে চাই আসলে সমস্যা কোথায়। অঞ্জনা আপার সম্পত্তির কাগজপত্র, দালিল, ব্যাংকড্রাফ্ট, ব্যাংকের চেক বইসহ কিছু বাসায় পাওয়া যায়নি। এগুলো উদ্ধার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেগুলো পাওয়া গেলে আমরা শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে যেকোনো সিদ্ধান্তে যাব।’
অঞ্জনার মৃত্যুর পর শোনা যাচ্ছে, অঞ্জনার দুটি বাড়ি ও একটি প্লট ছিল। সেগুলো নাকি বিক্রি করে তিনি ভাড়া বাসায় থাকছেন বিষয়টি কতটা সত্য- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএ তায়েব বলেন, ‘অঞ্জনা আপর পৈত্রিক কিছু সম্পত্তি ছিল। এছাড়া আরও কিছু সম্পত্তি বিক্রির টাকা আসছে। সেগুলোর কোনো হিসেব আমরা পাচ্ছি না। এগুলো চিত্রনায়িকা আন্না, মুক্তি, কোরিওগ্রাফার ইসুফসহ অনেকেই জানতেন। তাদের কাছ থেকেও আমরা নানানভাবে মন্তব্য পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমাদের এ ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করা। তদন্ত করে আমাদের কাছে অসংলগ্ন কিছু পেলে তিন দিন পর আমারা পুলিশে জানাব। এককথায় আগামী তিন দিনের মধ্যে ১৫ বছরের ইতিহাস পরিষ্কার হবে। এ ক্ষেত্রে মামলাও হতে পারে।’
অভিযোগের বিষয়ে নায়িকা অঞ্জনা রহমানের পালিত ছেলে নিশাত মনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সবগুলোর উত্তর আমি তিনদিন পর দেবো।’
৬ দিন ধরে অসুস্থ থাকার পর ২২ ডিসেম্বর অঞ্জনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকটি পরীক্ষার পর রক্তের সংক্রমণ ধরা পড়ে। অবস্থা উন্নত না হওয়ায় ১ জানুয়ারি দিবাগত রাতে অঞ্জনাকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি রাত ১টা ১০ মিনিটে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।