ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ওষুধ ও লিনেন সামগ্রী (গজ, ব্যান্ডেজ, তুলাসহ অন্যান্য) কেনার জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর দরপত্র হয়। এতে বরাদ্দ প্রায় ১১ কোটি টাকা। অভিযোগ উঠেছে, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে দরপত্রে ইচ্ছামতো শর্ত আরোপ করা হয়েছে। ফলে অংশ নিতে পারছেন না অন্যান্য ঠিকাদাররা। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এসব শর্ত শিথিলের আহ্বান জানিয়েছে। তবে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক বলছে, নিয়ম মেনে সব করা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ থাকলে অনলাইনে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত ২৯ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ওষুধ, লিনেন সামগ্রী কেনার জন্য ছয় প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ১৪ জানুয়ারি। তবে শর্তের বেড়াজালে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারছে না।

বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ মালিক মিনা মাহামুদ নবী শাহিন সমকালকে বলেন, ওষুধ ও লিনেন সামগ্রী কেনাকাটার জন্য ছয় কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালটির প্রধান ১১ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করেন। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারছে না। এছাড়া দরপত্রে আবেদনের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিবন্ধিত সনদ থাকতে হবে, যা অযৌক্তিক। বিশেষ কোম্পানিকে সুবিধা দিতে এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে।

আরেক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, নিয়ম বহির্ভূত শর্তগুলো আগামী ২ কার্যদিবসের মধ্যে সংশোধন ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।

এ বিষয়ে ঝিনাইদাহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা মেনে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে। তারপরও দরপত্র নিয়ে কোনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের আপত্তি থাকলে অনলাইনে অভিযোগ করতে পারেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ