চাল চুরির আসামি মোটরসাইকেল চুরির মামলায় কারাগারে
Published: 12th, January 2025 GMT
বাজারের মুদি দোকান থেকে একবস্তা চাল চুরির অভিযোগে রাজু আহম্মেদ (১৯) নামে এক যুবককে জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। কিন্তু পুলিশ চাল চুরির মামলা না দিয়ে মোটরসাইকেল চুরির মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে তাকে।
অভিযুক্ত যুবককে অন্য মামলায় কারাগারে পাঠানোর এমন অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে সংক্ষুব্ধ ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া জনপ্রতিনিধিসহ পরিবারের লোকজন।
রাজু আহম্মেদ পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মাহানপাড়া এলাকার আইবুল হকের ছেলে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে, গত ১১ জানুয়ারি রাতে হাড়িভাসা বাজারের একটি দোকান থেকে চালের বস্তা চুরির অভিযোগে স্থানীয়রা রাজু আহম্মেদকে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান চাল দোকানদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, “চাল চুরির ঘটনায় দোকানদার আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে আমি পুলিশে খবর দেই। পরে সদর থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ইউনিয়ন পরিষদে আসেন এবং শতশত মানুষের সামনে থেকে তাকে নিয়ে যান। সেসময় চাল দোকানদার বাদী হয়ে মামলা করতে চাইলে পুলিশ- প্রয়োজন নেই বলেন। কিন্তু পরে যা শুনলাম তাতে আমি বিব্রত এবং হতবাক। পুলিশের এহেন কাণ্ড কোনভাবেই কাম্য নয়।”
জানা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি নাজমুল হুদা (৪৬) নামে এক ব্যক্তি সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে সদর থানায় এজহার দায়ের করেন। সেই মামলাতেই চাল চুরিতে অভিযুক্ত রাজুকে আটক দেখান পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা থানার অপর উপ-পরিদর্শক আবিদ হাসান বাদল।
এই উপ-পরিদর্শক আদালতে আসামি প্রেরণের নথিতে উল্লেখ করেন, ‘গত ৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজু আহম্মেদ অজ্ঞাত আসামিদের সহযোগিতায় মোটরসাইকেলটি চুরি করেছে।’ রাজুকে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও এই পুলিশ কর্মকর্তা নথিতে লিখেছেন, তাকে বাজার থেকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশের এমন আচরণে দিশেহারা রাজুর বাবা বলেন, “আমার ছেলে অপরাধ করেছে আমি স্বীকার করি। যেই অপরাধ করেছে, সেই অপরাধের সাজা হোক। মিথ্যা মামলায় তাকে কেন জড়ানো হচ্ছে? এক বস্তা চাল চুরির সাজা আর লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেল চুরির সাজা তো এক হতে পারে না।”
এ বিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি রাজুকে আটক করে আনা উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমানকে।
এদিকে, মুঠোফেনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক আবিদ হাসান বাদল। বলেন, “থানায় আসেন সাক্ষাতে কথা বলবো।”
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এস.
অভিযোগ না থাকলে অন্য মামলায় আটক দেখানো যাবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যে আটক করছে তার কাছে মোটরসাইকেল চুরির তথ্য থাকলে আটক করতে পারে। একজন চোরতো একাধিক চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতেই পারে।”
ঢাকা/নাঈম/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা কমপ্লায়েন্স অনুসরণে
অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়মত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদের আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিল ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘পরিচালনা পর্ষদ সভা ও বার্ষিক সাধারণ সভার গুরুত্ব এবং লিমিটেড কোম্পানির কমপ্লায়েন্স’ শীষর্ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্ম পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) রেজিস্টার এ. কে. এম নুরুন্নবী কবির এ কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় ঢাকা চেম্বারের শতাধিক সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
নুরুন্নবী কবির বলেন, ‘‘বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় পৌনে ৩ লাখ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আরজেএসসিতে নিবন্ধিত রয়েছে। কোম্পানি নিবন্ধনের প্রায় সব প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হয়ে থাকে।’’
তিনি জানান, শুধু কোম্পানির শেয়ার ট্রান্সফারের বিষয়টি আনলাইন সেবার বাইরে আছে। যেটি ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যার মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়ী সমাজের জন্য ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘‘অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়সমত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদেরকে আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।’’
বিশেষ করে সরকারের সকল সেবা প্রাপ্তির পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কমপ্লায়েন্স মেনে চলার উপর তিনি জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও শিল্পখাতের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে লিমিটেড কোম্পানি ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সুশাসনের গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অনেক উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি আইন, গঠনতন্ত্র বা কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়ের জটিলতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়। যা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’’
কর্মশালাটি পরিচালনা পর্ষদ সভা, বার্ষিক সাধারণ সভা, বিশেষ সাধারণ সভা প্রভৃতির গুরুত্ব, সময়মতো এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পদ্ধতি, কোম্পানি আইনের আওতায় প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স বজায় রাখার কৌশল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করবে বলে জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।
ঢাকা/নাজমুল//