কুষ্টিয়ায় বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ১৮
Published: 12th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ার মিরপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে কয়েক দিন ধরেই ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপির কর্মী রাশেদ মাহমুদ নাসিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তাঁরা দুজনেই কমিটির আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। অ্যাডহক কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য মুকুলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন নাসির। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গতকাল শনিবার রাতে মুকুলকে হুমকি দেন নাসির।
এরই প্রতিবাদে আজ বেলা তিনটার দিকে বুড়াপাড়া বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জামায়াতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। প্রতিবাদ সভায় জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল গফুর উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিএনপির কর্মী নাসিরের সমর্থকেরা সেখানে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে নাসিরের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন হামলা চালান। এতে দুই পক্ষের লোকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৮ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ৬ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১২ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার বলেন, বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন জামায়াতের আমিরের নাম দেওয়া হয়েছিল। অথচ বিএনপির নেতা নাসির তার নাম প্রত্যাহার করে নিতে হুমকি দিচ্ছিলেন। এরই প্রতিবাদে সমাবেশ করার সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা করেন। হামলায় তাঁদের অনেকে আহত হয়েছেন।
মিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, ‘নাসির একসময় ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কর্মী। ঘটনাটি যেহেতু স্থানীয় দুই পক্ষের, তাই এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হোসেন ইমাম বলেন, হাসপাতালে যাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের মধ্যে একজন বৃদ্ধের অবস্থা গুরুতর। প্রত্যেকে মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, একটি বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে শিকারিদের হামলায় বন কর্মকর্তা আহত
সুন্দরবনে হরিণ শিকারীদের হামলায় পূর্ব বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব আহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ডিমেরচর এলাকায় হামলা করা হয়। পরবর্তীতে তিন শিকারিকে আটক করেছে বনরক্ষীরা।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল্লাহ জানান, হরিণ শিকারিদের আক্রমণে একজন বন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
হরিণ শিকারের ফাঁদে আটকা পড়ল বানর
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ৮ ফুট লম্বা অজগর অবমুক্ত
তিনি আরো জানান, বন বিভাগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তারা অভিযোগ দিলে এবং আসামিদের হস্তান্তর করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আটকরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের রাফি হাসান (২৬), রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া গ্রামের শহিদ মল্লিক (২৮) ও একই উপজেলার ঝালবাড়ি গ্রামের আল আমিন আকুঞ্জি (২৭)।
আহত সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণি রক্ষা ও হরিণ শিকাররোধে বনরক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে ডিমেরচর এলাকায় বনের ভেতরে হেঁটে টহল দিচ্ছিলাম। বনের মধ্যে হরিণ ধরার জন্য পেতে রাখা একাধিক ফাঁদ দেখতে পাই। সেখানে চার থেকে পাঁচজন শিকারিকেও দেখতে পাই। আমি দৌড়ে গিয়ে একজনকে ধরে ফেললে বাকি শিকারিরা ফিরে এসে আমাকে মারধর করে ধৃত শিকারিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’’
পরে বনরক্ষীরা ঘটনাস্থল থেকে ১৮টি হাঁটা ফাঁদ উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি।
আহত রানা দেবকে তাৎক্ষণিকভাবে দুবলারচরের অস্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলার পরপরই বনরক্ষীরা অভিযান চালিয়ে তিন শিকারিকে আটক করে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী ও শরণখোলা রেঞ্জের অন্যান্য কর্মকর্তারা রাস পূজার দায়িত্ব পালনের জন্য দুবলার চরে অবস্থান করায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল