Prothomalo:
2025-05-01@03:12:51 GMT

আসল স্বতন্ত্র পরিচালক আসছে

Published: 13th, January 2025 GMT

ব্যাংকবহির্ভূত সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালকেরা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মতামত দিচ্ছেন না। অনিয়মের সময়ও তাঁরা চুপ থাকেন। এ জন্য সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছভাবে পরিচালনায় ‘প্রকৃত’ বা ‘আসল স্বতন্ত্র পরিচালক’ নিয়োগ দিতে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সাবেক ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, হিসাববিদ ও অর্থনীতিবিষয়ক শিক্ষকদের নিয়ে প্যানেল গঠন করা হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও অবশ্য প্যানেলের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালকের মেয়াদ শেষ হলে এই প্যানেল থেকে নিয়োগ দিতে হবে।

সভার কোনো সিদ্ধান্তে দ্বিমত হলে আমানতকারীদের স্বার্থে এই পরিচালকেরা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনো ঋণ নিলে এই পরিচালকেরা গ্যারান্টিপত্রে সই করবেন না।

এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কঠোর তদারকির মধ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির অবস্থা নাজুক। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দুজন করে স্বতন্ত্র পরিচালক থাকবেন। এ জন্য শতাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে প্যানেল গঠনের চিন্তা করা হচ্ছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে কমপক্ষে দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক রাখার বিধান রয়েছে। সুশাসনের স্বার্থে এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র পরিচালকেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারক হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন হলেও ওই কোম্পানির নেওয়া ঋণ খেলাপিতে পরিণত হওয়ার কারণে তাঁরাও ঋণখেলাপি হয়ে যান। ফলে অনেক ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দক্ষ ব্যক্তিবর্গ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। স্বতন্ত্র পরিচালকদের মূল দায়িত্ব হলো, আমানতকারী ও সাধারণ শেয়ারধারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে নিরপেক্ষ মতামত প্রদান করা। তবে পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালকদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মতামতের কোনো প্রতিফলন লক্ষ করা যাচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদে প্রতিষ্ঠান ও আমানতকারীদের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা কোনোরকম নোট অব ডিসেন্টও দেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেওয়া স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচনের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো স্বতন্ত্র পরিচালকের পদ শূন্য হলে তা তিন কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। স্বতন্ত্র পরিচালকের মেয়াদ পূর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে তিন দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের ভূমিকা কী হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত স্বতন্ত্র পরিচালকেরা দায়িত্ব ও কর্তব্য স্বাধীনভাবে পালন করবেন। কোনোরূপ অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বা স্বাধীন মতামত প্রদান বাধাগ্রস্ত হলে বা পর্ষদ সভার কার্যবিবরণীতে মতামতের প্রতিফলন না ঘটলে তিনি অবিলম্বে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখিতভাবে জানাবেন। প্রয়োজনে পরিচালনা পর্ষদের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাঁর দেওয়া নোট অব ডিসেন্টের কপি তিনি সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবেন।

স্বতন্ত্র পরিচালকদের সুরক্ষা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ওই ঋণের বিপরীতে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা কোনোরূপ গ্যারান্টিপত্রে সই করবেন না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে স্বতন্ত্র পরিচালক ঋণখেলাপি হবেন না।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নিতে হলে বিনিয়োগ থাকতে হবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া থাকতে হবে নিয়মিত আয়ের উৎস। আর বিনিয়োগের ৬ মাসের আগে ঋণ পাবে না কোনো বিনিয়োগকারী। একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড এবং কোম্পানির হিসাবেও মার্জিন ঋণ দেওয়া হবে না। চূড়ান্ত মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এসব সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ প্রসঙ্গে এসব তথ্য তুলে ধরেন পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সদস্যরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন এবং পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান।

টাস্কফোর্সের সদস্যরা বলেন, পুঁজিবাজার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করেই সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে টাস্কফোর্স। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ৩ মাসের আগে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে, মার্জিন নিয়ে শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধ হবে। মার্জিন ঋণ নিয়ে সুশাসন না থাকায় বিপুল অংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীর পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুঁজিবাজার। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং মার্জিন খারাপ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। যে কারণে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা টাস্কফোর্সের মূল্য উদ্দেশ্য।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, অনেক স্টেকহোল্ডার দাবি করছেন তাদের সাথে বসা হয়নি। অথচ আমরা দেখলাম তাদের সাথে আমরা ৩ বারও বসে ফেলেছি। তবে কেন এরকম মিস কমিউনিকেশন। আমরা অংশীজনদের বাহিরেও যারা বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের সাথেও আমরা বসেছি। এরপরেও যদি মনে হয় আমরা কিছু বাদ দিয়েছি বা গ্যাপ ছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তা আমরা যুক্ত করে দিব। তবে অংশীজনদের থেকে বেশি আমরা সাধারণ মানুষদের থেকে অনেক কিছু পেয়েছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে। যার কারণ বাজার অচল অবস্থায় চলে গেছে। সে অবস্থাটাকে মাথায় রেখে আমরা চিন্তা করেছি, এর অন্যতম কারণ হলো মার্জিন রুলস। কারণ মার্জিন রুলসটা যদি প্ল্যান করে দেওয়া হতো, গভর্নেন্সটা যদি সঠিক থাকতো, তাহলে এ ধরনের অবস্থা তৈরি নাও হতে পারতো। তাই মার্জিন রুলসকে আমরা টপ প্রায়োরিটি আইটেম ধরেছি। পৃথিবীতে মার্জিন রুলসকে শর্টটার্ম ওয়ে হিসেবে নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ১:৩/৪ রেশিওতে মার্জিন ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷ এগুলা কিভাবে হয়েছে? এরপর বাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি ক্রিয়েট হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এই জিনিসগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি বাজারে না হয়। মার্জিন নিয়ে আর গ্যামব্লিং করা যাবেনা। মার্জিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। এতো পরিমাণ নেগেটিভ ইক্যুইটি না থাকলে বাজারের আজ এই পরিস্থিতি হতো না।

হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন বলেন, আমাদের কাজে সহযোগিতা করেছে ফোকাস গ্রুপ। মূল কাজ করেছে টাস্কফোর্স। আমরা কাজ করতে যেয়ে পাবলিকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেও পেয়েছি, তবে পাবলিক থেকে পরামর্শ বেশি এসেছে। এটা খুব ভালো বিষয়। কারণ যত বেশি পরামর্শ আসবে, আমরা তত বেশি রিফাইন করার সুযোগ পাব।

সংবাদ সম্মেলনে একটি উপস্থাপনায় পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আজকে আমার খুবই ভালো লাগছে যে, এই প্রথম বাংলাদেশে আইনি ফরমেশন করতে যাচ্ছি, যেখানে ব্রেইন স্টর্মিং ড্রাফটিং হয়েছে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে। এ মার্কেটে যারা কাজ করেন, তাদের আইডিয়াগুলো নিয়েই ড্রাফট করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএসইসির ওয়ার্কিং টিমের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এছাড়া মার্কেটের বড় বড় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব নিয়ে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছি।

এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়। গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আকবর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।

ঢাকা/এনটি/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানের এল-ফাশারে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ৪১ বেসামরিক
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে চান?
  • মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা
  • পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, ৩ দিনে নিহত ৭১
  • পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, নিহত ৭১