ব্যাংকবহির্ভূত সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালকেরা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মতামত দিচ্ছেন না। অনিয়মের সময়ও তাঁরা চুপ থাকেন। এ জন্য সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছভাবে পরিচালনায় ‘প্রকৃত’ বা ‘আসল স্বতন্ত্র পরিচালক’ নিয়োগ দিতে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সাবেক ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, হিসাববিদ ও অর্থনীতিবিষয়ক শিক্ষকদের নিয়ে প্যানেল গঠন করা হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও অবশ্য প্যানেলের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালকের মেয়াদ শেষ হলে এই প্যানেল থেকে নিয়োগ দিতে হবে।
সভার কোনো সিদ্ধান্তে দ্বিমত হলে আমানতকারীদের স্বার্থে এই পরিচালকেরা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনো ঋণ নিলে এই পরিচালকেরা গ্যারান্টিপত্রে সই করবেন না।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কঠোর তদারকির মধ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির অবস্থা নাজুক। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দুজন করে স্বতন্ত্র পরিচালক থাকবেন। এ জন্য শতাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে প্যানেল গঠনের চিন্তা করা হচ্ছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে কমপক্ষে দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক রাখার বিধান রয়েছে। সুশাসনের স্বার্থে এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র পরিচালকেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারক হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন হলেও ওই কোম্পানির নেওয়া ঋণ খেলাপিতে পরিণত হওয়ার কারণে তাঁরাও ঋণখেলাপি হয়ে যান। ফলে অনেক ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দক্ষ ব্যক্তিবর্গ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। স্বতন্ত্র পরিচালকদের মূল দায়িত্ব হলো, আমানতকারী ও সাধারণ শেয়ারধারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে নিরপেক্ষ মতামত প্রদান করা। তবে পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালকদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মতামতের কোনো প্রতিফলন লক্ষ করা যাচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদে প্রতিষ্ঠান ও আমানতকারীদের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা কোনোরকম নোট অব ডিসেন্টও দেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেওয়া স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচনের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো স্বতন্ত্র পরিচালকের পদ শূন্য হলে তা তিন কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। স্বতন্ত্র পরিচালকের মেয়াদ পূর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে তিন দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের ভূমিকা কী হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত স্বতন্ত্র পরিচালকেরা দায়িত্ব ও কর্তব্য স্বাধীনভাবে পালন করবেন। কোনোরূপ অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বা স্বাধীন মতামত প্রদান বাধাগ্রস্ত হলে বা পর্ষদ সভার কার্যবিবরণীতে মতামতের প্রতিফলন না ঘটলে তিনি অবিলম্বে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখিতভাবে জানাবেন। প্রয়োজনে পরিচালনা পর্ষদের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাঁর দেওয়া নোট অব ডিসেন্টের কপি তিনি সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবেন।
স্বতন্ত্র পরিচালকদের সুরক্ষা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ওই ঋণের বিপরীতে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা কোনোরূপ গ্যারান্টিপত্রে সই করবেন না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে স্বতন্ত্র পরিচালক ঋণখেলাপি হবেন না।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাউবিতে কমনওয়েলথ এমবিএ, আবেদন করুন দ্রুত
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কমনওয়েলথ এক্সিকিউটিভ এমবিএ/এমপিএ প্রোগ্রামে ভর্তিতে আবেদন প্রক্রিয়া চলছে। আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৭ জুনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এ প্রোগ্রামটি কমনওয়েলথ অব লার্নিং, ভ্যানকুভার, কানাডার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ছাড়া আরও ১১টি দেশে চালু রয়েছে। অ্যাডমিশন সেমিস্টার ২২২-এর আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল সেন্টারে এ প্রোগ্রামের কার্যক্রম চলবে।
ভর্তির আবেদনের যোগ্যতা
১. স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট বা সমমান ডিগ্রি (কমপক্ষে বিএ, বিএসসি, বিএসএস, বিবিএ, বিকম, এমবিবিএস/ডেন্টাল, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি অ্যাগ্রিকালচার, বিএসসি নার্সিং ইত্যাদি)।
২. কমপক্ষে দুই বছরের কর্মঅভিজ্ঞতা।
৩. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং
৪. কমনওয়েলথ এক্সিকিউটিভ এমবিএ/এমপিএ অ্যাডমিশন টেস্টে সন্তোষজনক স্কোর অর্জন করতে হবে।
আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা, যেভাবে মিলবে সুযোগ১২ মার্চ ২০২৫ভর্তির আবেদনের প্রক্রিয়া
১. ওয়েবসাইটের Apply Now বাটনে ক্লিক করে ভর্তি নির্দেশিকা পড়ে Apply Now-এ ক্লিক করতে হবে। Next button-এ সাধারণ তথ্য পূরণ করতে হবে।
২. ব্যক্তিগত তথ্যাদি আপলোড করার পর সাম্প্রতিক সময়ে তোলা একটি ছবি (৩০০×৩০০ পিক্সেল, জেপিজি ফরম্যাটে) এবং আবেদনকারীর স্ক্যান করা স্বাক্ষর (৩০০×১০০ পিক্সেল, জেপিজি ফরম্যাটে) সংযুক্ত করতে হবে।
৩. Next Button-এ ক্লিক করে শিক্ষাগত ও কর্মঅভিজ্ঞতার তথ্য যুক্ত করতে হবে। আবেদনকারীর মুঠোফোনে একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে।
৪. ইউজার আইডি, পাসওয়ার্ড ও পেমেন্ট পরিশোধ-সংক্রান্ত সব তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর-পিএইচডির সুযোগ১৭ মার্চ ২০২৫পরীক্ষার তারিখ ও সময়
১. আবেদনের শেষ তারিখ: ১৭ জুন ২০২৫।
২. ভর্তি পরীক্ষার তারিখ: ২০ জুন ২০২৫, বেলা ২টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট।
৩. ভর্তি পরীক্ষার স্থান: ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্র।
৪. পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর: সাধারণ সচেতনতা ৫০, ইংরেজি ভাষা ৫০, কোয়ান্টিটেটিভ টেকনিকস ৫০, রিজনিং ৫০, মোট ২০০ নম্বর।
৫. ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে: শুধু শুক্রবার।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট
আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫