গবির চতুর্থ সমাবর্তন: ফের বাড়ল নিবন্ধনের সময়
Published: 13th, January 2025 GMT
দশক পেরিয়ে অবশেষে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আয়োজন হতে যাচ্ছে চতুর্থ সমাবর্তন। বহুল প্রতীক্ষিত এ সমাবর্তনে অংশগ্রহণের নিবন্ধনের সময়সীমা তৃতীয় দফায় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সমাবর্তন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে, নিবন্ধনের সময় দুই দফা বৃদ্ধি করা হয়।
গত বছরের ২ মে সমাবর্তনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা ছাড়াই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ১ আগস্ট পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরে ইউজিসি সমাবর্তন আয়োজন পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিলে গবির চতুর্থ সমাবর্তনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয় এবং নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ সমাবর্তনে স্নাতক/স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস ও বিডিএসসহ প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে। ইতোমধ্যে প্রায় ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এ সমাবর্তনে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত স্নাতক/স্নাতকোত্তর, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পেশাগত এমবিবিএস এবং ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পেশাগত বিডিএস ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও ২০২৪ সালের অক্টোবর সেশনের যে শিক্ষার্থীরা স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে তারাও আবেদন করতে পারবেন।
সমাবর্তনের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সমাবর্তনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে গবি প্রশাসন।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।
যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে
২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।
শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’
গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’