দশক পেরিয়ে অবশেষে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আয়োজন হতে যাচ্ছে চতুর্থ সমাবর্তন। বহুল প্রতীক্ষিত এ সমাবর্তনে অংশগ্রহণের নিবন্ধনের সময়সীমা তৃতীয় দফায় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সমাবর্তন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে, নিবন্ধনের সময় দুই দফা বৃদ্ধি করা হয়।

গত বছরের ২ মে সমাবর্তনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা ছাড়াই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ১ আগস্ট পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরে ইউজিসি সমাবর্তন আয়োজন পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিলে গবির চতুর্থ সমাবর্তনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয় এবং নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ সমাবর্তনে স্নাতক/স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস ও বিডিএসসহ প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে। ইতোমধ্যে প্রায় ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. আবুল হোসেন বলেন, “আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গবির চতুর্থ সমাবর্তন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালিন সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। সমাবর্তনের বক্তা হিসেবে থাকবেন অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুন্দর সমাবর্তনের আয়োজন করতে চাই। সার্বিক বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করি।”

এ সমাবর্তনে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত স্নাতক/স্নাতকোত্তর, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পেশাগত এমবিবিএস এবং ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পেশাগত বিডিএস ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও ২০২৪ সালের অক্টোবর সেশনের যে শিক্ষার্থীরা স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে তারাও আবেদন করতে পারবেন।

সমাবর্তনের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সমাবর্তনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে গবি প্রশাসন।

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান

গণগ্রেপ্তার, নির্যাতন–নিপীড়ন–হয়রানি চলছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ক তখনো আটক ছিলেন ডিবি কার্যালয়ে। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারি উদ্যোগে লোকদেখানো ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ পালন করা হচ্ছিল ৩০ জুলাই। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের এই কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করে সেদিন ‘মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং তা অনলাইনে প্রচারের কর্মসূচি’ পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এই কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমর্থনে ২৯ জুলাই রাত (২০২৪ সাল) থেকেই ফেসবুকের প্রোফাইলে লাল রঙের ফ্রেম ব্যবহার শুরু হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, লেখক, সাংবাদিক, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানান।

ফেসবুকে অভূতপূর্ব সাড়ার পাশাপাশি নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ৩০ জুলাই দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস ও সড়কে মিছিল করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকার করা রিটের শুনানিতে ৩০ জুলাই হাইকোর্ট মন্তব্য করেন ‘এসব মৃত্যু আমাদের সবার জন্যই দুঃখজনক’।

সেদিন দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা)। অধ্যাপক আসিফ নজরুল (বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা), টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকারকর্মী

শিরীন হক, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর যে মাত্রায় বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা দেশের জনগণ ও বিশ্ববিবেককে স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে।’

অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ দেওয়া ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ৩০ জুলাই বিবৃতি দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

গণ–অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলো সম্পর্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের (বর্তমানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক) চলতি জুলাই মাসের ৬ তারিখ রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ২৯ জুলাই (২০২৪ সাল) সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় শোক এবং কালো ব্যাজ ধারণের ঘোষণা দেওয়ার পর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। নাছির উদ্দীন তাঁকে রাষ্ট্রীয় কালো ব্যাজের বিপরীতে লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাব দেন। পরে মো. আবু সাদিক কায়েমকে (ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা) ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন আবদুল কাদের। সাদিকও সম্মতি দেন। নাছির উদ্দীন ও আবু সাদিকের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেই মুখে–চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা ও তা অনলাইনে প্রচার করার কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
  • পিডিবির ভুলে ২৪৫ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হলো বাংলাদেশকে
  • ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক
  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • মানবতাবিরোধী অপরাধ: মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন বহিষ্কৃত আ.লীগ নেতা মোবারক
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • দণ্ডাদেশের রায় বাতিল, খালাস পেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান