কাছাকাছি সময়েই একদিকে চলবে ভারতে আইপিএল, অন্যদিকে পাকিস্তানে পিএসএল। বাংলাদেশের বাজারে বরাবরই আইপিএলের আকর্ষণ বেশি। ২৩ মার্চ শুরু হতে যাওয়া এবারের আসরে সেখানে বাংলাদেশের কোনো মুখ নেই। তাতে এবার হয়তো ভাগ বসাতে যাচ্ছে ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তান সুপার লিগ টি২০। কেননা সেখানে এবার তিন-তিনজন বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে দেখা যাবে খেলতে।
গতকাল পিএসএলের ড্রাফট থেকে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন টপঅর্ডার ব্যাটার লিটন কুমার দাস, পেসার নাহিদ রানা ও লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর এদিন পাকিস্তানের লাহোর থেকে সুখবরটি পান লিটন। এদিনের ড্রাফটে সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদরা থাকলেও প্রথম দফায় দল পাননি তারা।
পেসার নাহিদ রানা বাংলাদেশিদের মধ্যে সবার আগে পাকিস্তান থেকে সুখবর পান। তাঁকে দলে ভিড়িয়েছে পেশোয়ার জালমি। এপ্রিলে বাংলাদেশের কোনো সিরিজ নেই, তাই ছাড়পত্র পেলে সতীর্থ হিসেবে বাবর আজম, সায়েম আইয়ুবকে পাবেন তিনি। গতির ঝড় তুলে পাকিস্তানে দলকে টেস্ট জেতানো এই পেসার ড্রাফটে গোল্ড ক্যাটেগরিতে ছিলেন। ওই ক্যাটেগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের ভিত্তি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৪৫ লাখ টাকা।
লিটন দাসকে সিলভার ক্যাটেগরি থেকে দলে নিয়েছে করাচি কিংস। একই ক্যাটেগরি থেকে রিশাদকে দলে ভিড়িয়েছে লাহোর কালান্দার্স। সিলভার ক্যাটেগরির ভিত্তি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার বা ২৩ লাখ টাকা। গোল্ড ক্যাটেগরির নাহিদ প্রথম দফার ডাকে দল পান।
তবে লিটন দ্বিতীয় রাউন্ড ও রিশাদ তৃতীয় রাউন্ড থেকে দল পেয়েছেন। পিএসএল ড্রাফটে সবচেয়ে দামি প্লাটিনাম ক্যাটেগরিতে ছিলেন সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। ওই ক্যাটেগরিতে থাকা ৪৪ জন ক্রিকেটারের ভিত্তি মূল্য নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক
রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।
চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ