বিপিএল: দেশিদের রাজত্বে রঙিন চায়ের দেশ
Published: 14th, January 2025 GMT
শেষ হয়েছে বিপিএলের সিলেট পর্ব। ঢাকা পর্বের মতো চায়ের নগরীতেও রান বন্যা দেখেছে দর্শক। সিলেট পর্বে অনেক কিছুর স্বাক্ষী হয়েছেন দর্শকরা। সাব্বির রহমানের ফর্মে ফেরা থেকে শুরু করে তামিম কাণ্ড, সোহানের কীর্তির সঙ্গে লিটন-তানজিদের ব্যাটে রেকর্ডের ঝড়ও দেখেছে সিলেটবাসী। সব মিলিয়ে কেমন গেল সিলেট পর্বের বিপিএল? দেখে নেওয়া যাক।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইগার্সের মধ্যকার রোমাঞ্চকর ম্যাচ দিয়ে শেষ হয় সিলেট পর্ব। ম্যাচে জয়ের খুব কাছে এসেও নাটকীয়ভাবে রংপুরের কাছে ৮ রানে হেরে যায় খুলনা। এই জয়ের ফলে ৭ ম্যাচের সবকটিতে জিতে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে রংপুর। আর এক ম্যাচ জিতলেই তারা প্লে’অফ নিশ্চিত করবে।
ঢাকা পর্বের পুরোটা সময় হারের বৃত্তে বন্দি থাকা ঢাকা ক্যাপিটালস জয়ের দেখা পেয়েছে সিলেটে এসে। চিটাগং কিংস টানা তিন ম্যাচ জিতে নিজেদের ফর্ম ধরে রেখেছে। উল্টো চিত্র খুলনার, তারা টানা তিন ম্যাচে হেরে পিছিয়ে পড়েছে। সিলেট স্ট্রাইকার্স ও দুর্বার রাজশাহী মিশ্র পারফরম্যান্সে জয়ের পাশাপাশি হারের স্বাদও পেয়েছে।
আরো পড়ুন:
তীরে এসে ডুবলো খুলনা, রংপুরের রোমাঞ্চকর জয়
খুশদীল ঝড়ে রংপুরের স্কোরবোর্ডে ‘হাসি’
সব মিলিয়ে পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে আছে চিটাগং কিংস। ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট তাদের। ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ফরচুন বরিশাল। ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে খুলনা। ৬ ম্যাচ করে খেলা সিলেট স্ট্রাইকার্স ও দুর্বার রাজশাহী ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে আছে টেবিলের পাঁচ ও ছয় নম্বরে। ৭ ম্যাচে মাত্র ১ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ঢাকা।
ঢাকা পর্বে রান খরায় ভুগতে থাকা লিটন দাস সিলেটে এসে পেয়েছেন রানের দেখা। টানা হাফ-সেঞ্চুরি ও অপরাজিত সেঞ্চুরিতে উঠে এসেছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় চারে। ৬ ম্যাচে তার রান ২৪০। তার ওপরের তিনে আছেন তানজিদ হাসান তামিম (২৪৬), উসমান খান (২৪৯)ও জাকির হাসান (২৫১)। সেরা পাঁচের অন্য নামটি সাইফ হাসান। ৭ ম্যাচে তার রান ২২৮।
বোলিংয়ে সিলেট পর্ব শেষে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন দুর্বার রাজশাহীর তাসকিন আহমেদ। ৬ ম্যাচে তার দখলে ১৪ উইকেট। ৫ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে দুইয়ে আবু হায়দার রনি। ৬ ম্যাচে সমান সংখ্যক উইকেট নিয়ে তিনে তানজিম হাসান সাকিব। সমান ৭টি করে উইকেট নিয়ে পরের দুটি স্থানে আছেন যথাক্রমে রংপুরের খুশদিল শাহ ও শেখ মেহেদী হাসান।
সিলেট পর্বের বিপিএল দর্শকদের মাঝে বেশ রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে। এই পর্বে পুরনো সাব্বিরকে দেখাটা ছিল প্রশান্তির মতো। ব্যাট হাতে দারুণ দুটি ইনিংস খেলেছেন নানান কারণে বিতর্কিত এই ক্রিকেটার। চট্টগ্রামের বিপক্ষে অপরাজিত ৮২ রানের পর সিলেটের বিপক্ষে করেছেন ১০ বলে ২৩। দুই ইনিংস মিলিয়ে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ১২টি!
এছাড়াও, সিলেট পর্বে বরিশালের বিপক্ষে রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান খেলেছেন বিপিএলের ইতিহাসের সেরা ম্যাচজয়ী ইনিংস। শেষ ওভারে ৬ বলে ২৬ রানের সমীকরণের ম্যাচে ৩টি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ৩০ রান তুলে বরিশালের আশার প্রদীপ নিভিয়ে দেন রাইডার্স ক্যাপ্টেন।
এই ম্যাচেই রংপুরের ইংলিশ ক্রিকেটার আলেক্স হেলসের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে আলোচনায় আসেন তামিম ইকবাল। দুই পক্ষই যার যার দিক থেকে বক্তব্য দিয়ে আগুনের আঁচ আরও বাড়িয়ে দেন। হেলসের দাবি ছিল, তামিম তাকে অতীত টেনে খোঁচা দিয়েছেন। তামিমের দাবি, সেরকম কিছুই তিনি বলেননি। উল্টো হেলস বরিশালের জুনিয়র এক ক্রিকেটারকে বাজে ভাষায় স্লেজ করেছেন। যদিও জরিমানাটা তামিমই গুনেছেন এক ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়ে।
সিলেট পর্বে শেষ উত্তাপটা ছড়িয়েছেন ঢাকার দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান। দুজন জোড়া সেঞ্চুরিতে বিপিএলের কয়েকটি রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটি ২৪১ রান তুলে দুজন তছনছ করেছেন রেকর্ড বই। এই রান বিপিএল তো বটেই, যেকোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে যেকোনো জুটিতে সর্বোচ্চ। বিপিএলের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে ঢাকা (২৫৪/১)।
সব মিলিয়ে সিলেট পর্ব ঢাকা পর্বকেও ছাড়িয়ে গেছে। দর্শকরা দেখেছেন পয়সা উসুল করা সব নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর মুহূর্ত। এবার চট্টগ্রাম পর্ব মাঠ গড়ানোর পালা। বীর চট্টলায় দলগুলো কতটা বীরত্ব দেখিয়ে রোমাঞ্চ ছড়াতে পারবে, সেটা সময়ের হাতেই তোলা থাকলো।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে দূর্বৃত্তদের গুলি
ফতুল্লায় কুতুবপুর ইউনিয়নের পাগলা বাজার এলাকায় মোটর সাইকেল যোগে এসে আফসার করিম প্লাজার মালিক নান্টু নামের এক ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করেছেন দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ৮টার দিকে পাগলা বাজার আফসার করিম প্লাজার সামনে ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে প্রতক্ষ্যদর্শী ফল ব্যবসায়ী উত্তম সাংবাদিকদেট জানান, আমি রাস্তার পাশে ফল নিয়ে বসে ছিলাম এমন সময় দেখলাম পাগলা বাজার আবসার করি প্লাজারের মালিক আলহাজ্ব নান্টু সাহেব অপর এক দোকান থেকে ফল কিনছিলেন।
এমন সময় তিনি গাড়িতে উঠার সময় তাকে লক্ষ্য করে দুইজন যুবক এলোপাথারি বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়, গুলির সময় ব্যবসায়ী নান্টু তার ব্যবহৃত প্রাইভেট কারে দ্রুত উঠে পড়েন। পরে সেখান থেকে তিনি গাড়ি নিয়ে ফতুল্লার দিকে চলে যান। অপরদিকে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা মোটর সাইকেল নিয়ে ঢাকার শ্যামপুরের দিকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে গাড়িতে গুলি করা কাচঁ পরে থাকতে দেখা যায়। কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, এ ঘটনার পর থেকে পাগলা বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি প্রাথমিকভাবে ঘটনা সত্যতা পাওয়া গেছেন তদন্তপূর্বক আইনগনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।