কক্সবাজারে গুলি করে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী হত্যার ঘটনায় মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের আগে গোলাম রব্বানীর সঙ্গে হোটেল অবস্থান করা নারীও রয়েছেন। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়।

গ্রেপ্তার তিনজনেরই বাড়ি  খুলনায়। তাঁদের নাম–পরিচয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে মৌলভীবাজার থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে। আগামীকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, ঘটনার পর থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যে পুলিশ জানতে পারে ঘটনায় জড়িত নারীসহ কয়েকজন আসামি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার থেকে জেলা পুলিশের একটি দল মৌলভীবাজারে অবস্থান করে অভিযান শুরু করেন। একপর্যায়ে গতকাল দিবাগত রাতে মৌলভীবাজার থেকে সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীর সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে আসা নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সক্ষম হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিনজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। তাঁদের মধ্যে ওই নারী কক্সবাজার ঘুরতে এসে কাউন্সিলর রব্বানীর সঙ্গে হোটেলে উঠেছিলেন। গ্রেপ্তার অপর দুজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন।’

গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানের ভেতরে তৈরি করা কাঠের সেতুর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় রব্বানীকে। তাঁর বাড়ি খুলনা সিটির দৌলতপুরে। তিনি খুলনা সিটির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর এবং খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁকেও অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এর আগে খুলনা সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার এবং কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা মেজবাউল হককে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গত শনিবার দুজনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাঁদের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ রোববার সকালে তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। তাঁদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তদন্ত না করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী মাজার এলাকার বাসিন্দা আবদুস সালামের বাড়ির গোয়াল থেকে কয়েকজন তিনটি গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। গরু চুরির কথা শুনে সবাই মিলে লাঠিসোঁটা হাতে তাঁদের ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে তাঁরা পাশের নাসিরাবাদ গ্রামের দিকে পালিয়ে যান।

পরে নাসিরাবাদ গ্রামের লোকজন গরু চোরের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁদের ধাওয়া করলে তিনজন স্থানীয় একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। এ সময় এলাকাবাসী তাঁদের পুকুর থেকে উদ্ধার করে পিটুনি দেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। আরেকজন গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা