ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীদের হলগুলোতে তীব্র আবাসন সংকট কাটাতে সিট না পাওয়া পর্যন্ত ছাত্রীদের বাইরে হোস্টেলে-মেসে থাকার জন্য মাসিক তিন হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই করে এ সহায়তা দেওয়া হবে।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ‘আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ সব তথ্য জানান।

এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদসহ ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকার যোগ্য কিন্তু আমরা সিট দিতে পারছি না, তাদেরকে প্রতি মাসে তিন হাজার করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় নয়, যারাই যোগ্য তারা সবাই এটি পাবেন। তিনি আরও বলেন, আমরা জানি এটি যথেষ্ট নয়, তবুও আমরা যতটুকু পারছি সহায়তার ব্যবস্থা করছি। বিশ্বব্যাংকের হাইয়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্টের (হিট) আওতায় এই আবাসন বৃত্তি দেওয়া হবে।

কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, আমরা হল নির্মাণের জন্য এবং হল মেরামতের সরকারের কাছে আবেদন পাঠিয়েছি। আগামী তিন বছর পর মেয়েদের আর আবাসন সংকট থাকবে না। ছেলেদের হলগুলোতে আসন ফাঁকা থাকবে যদি মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হয়ে যায়। আর জুনের মধ্যেই মেরামতের জন্য বরাদ্দ চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি। কর্মচারীদের জন্য নির্মিত ভবনে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে না বলেও জানান কোষাধ্যক্ষ।

উপ-উপাচার্য সায়মা হক বিদিশা বলেন, প্রশাসন সর্বোচ্চ আন্তরিক। তবে আবাসনের মত সমস্যা মুহূর্তেই সমাধানযোগ্য নয়। এই সহায়তা আদর্শ সমাধান নয়, তবুও যাদের একেবারে প্রয়োজন, তাদেরকে আমরা সহযোগিতা করছি। আমাদের অবকাঠামো মাস্টারপ্ল্যান সরকারের কাছে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি আমাদের সফলতা প্রক্রিয়ার অগ্রগতি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পাঁচটি হলের বিপরীতে ছেলেদের হল ১৩টি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তির হার ৫২ শতাংশের কাছাকাছি। ফলে মেয়েদের হলগুলোতে তীব্র আবাসন সংকট। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে আবাসনের দাবিতে মেয়েরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো, প্রতীকী অনশন, ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র হল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা, ৩১ জুলাই ভোটগ্রহণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে৷ আগামী ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। একই দিনে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

বুধবার রাত পৌনে ১টার দিকে এই তপশিল ঘোষণা করেন জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান।

এর আগে রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তপশিল ঘোষণার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তিনি বলেন, জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৮-এর (খ) ধারা অনুযায়ী, আগামী ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এবং হল সংসদ নির্বাচন একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। 

দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে জাকসু না থাকায় শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছাড়াই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ। উপেক্ষিত হয়ে আসছে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়া৷ তবে এবার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা সেই অধিকার ফিরে পাবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে সিনেটে ৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আসে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷ গতকাল পরিবেশ পরিষদের একটি মতবিনিময় সভা হয়েছে, সেখানে একটি সুন্দর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্রীড়াশীল সংগঠন, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি।’ 

রাত পৌনে ১টার দিকে নির্বাচনী তপশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান। এ সময় তিনি বলেন, ‘তফশিল অনুযায়ী ১২ মে খসড়া ভোটার তালিকা ও আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে৷ ২১ মে খসড়া ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি গ্রহণ ও আচরণবিধি মতামত গ্রহণ, ৩০ জুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে।’

আগামী ১ জুলাই থেকে ৩ জুলাইয়ের মধ্যে মনোনয়ন সংগ্রহ করা এবং ৭ জুলাই মনোনয়ন জমাদানের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে৷ ৯ জুলাই মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই ও খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ শেষে ১১ জুলাই পর্যন্ত মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিষয়ে এবং বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, এছাড়া ১৪ জুলাই মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ও ১৫ জুলাই প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ১৬ জুলাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে৷ একই দিন থেকে ২৮ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ