সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনার লোগো ব্যবহার করায় সাময়িক বরখাস্ত হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ৪ লঙ্ঘিত হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যায় তাকে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের চিঠিতে সই করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.

সুমন কান্তি বড়ুয়া। 

বরীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসান তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বরখাস্তের চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউসিজি) পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, সরকারি ভ্যাট ও উৎসে কর পরিশোধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের বিপরীতে গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি পত্রে ‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ লেখা সম্বলিত লোগো ব্যবহার করেন অর্থ পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার। নিজের স্বাক্ষরিত ওই পত্রে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান সম্বলিত লোগো ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে বিধি অনুযায়ী খোরপোষ হিসেবে তিনি অর্ধেক বেতন ভাতা পাবেন। 

এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. ফিরোজ মাহমুদকে অর্থ পরিচালকের পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে উপাচার্য কার্যালয় থেকে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।  

এ ঘটনায় গোলাম সরোয়ারের মোবাইল ফোনে বুধবার রাতে মন্তব্য জানতে কল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিভিস করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ বরখ স ত বরখ স ত

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ