কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “কৃষি আমাদের দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। আমাদের দায়িত্ব শুধু কৃষকদের সহায়তা করাই নয় বরং তাদের জীবনমান উন্নত করা এবং টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য কাজ করা।”

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) তিনি রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ মিলনায়তনে ৪৩ তম বিসিএস (কৃষি) ক্যডারে নব যোগদানকৃত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, “দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে কৃষি। আমাদের মোট শ্রমশক্তির একটি বিশাল অংশ প্রায় ৪০.

৬২ শতাংশ এখনো কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত।” 

যোগদানকৃত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “কৃষিখাতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার সংমিশ্রণ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমির অবক্ষয়, কৃষি উৎপাদনে নতুন প্রযুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির রূপান্তর-এসবই আমাদের সামনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। মেধা, উৎসাহ এবং সেবার মনোভাব এই খাতকে আরও উন্নত করবে। আপনারা যেখানেই কাজ করবেন, সেখানকার কৃষকদের জীবনমান উন্নয়ন তথা কৃষিক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়নে আপনারা হয়ে উঠবেন নেতৃত্বের আলো।”

তিনি আরো বলেন, “বর্তমান যুগ তথ্য ও প্রযুক্তির। তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি এটি আমাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে বিশেষ দায়িত্বশীল হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি যেন সবসময় পেশাদার হয়।  পোস্ট, মন্তব্য এবং শেয়ার করা তথ্যের মাধ্যমে পেশাদারিত্ব প্রতিফলিত হতে হবে।” 

কৃষি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আপনাদের কাছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল তথ্য থাকবে। এসব তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন এবং নিশ্চিত করুন যে কোনো গোপন বা সংবেদনশীল তথ্য যেন জনসমক্ষে না আসে।” 

কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম ও মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা। 

ঢাকা/এএএম/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা গ্রেপ্তার

সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম ওরফে অপুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে জানে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

আরও পড়ুনচাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাসহ আটক ৫২৬ জুলাই ২০২৫

মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় জানে আলম জড়িত।

গত ১৭ জুলাই গুলশানে আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দেন আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদসহ কয়েকজন। তাঁরা শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সিদ্দিক আবু জাফর ১০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। গত শনিবার রাতে চাঁদার বাকি টাকা আনতে যান তাঁরা। ঘটনাস্থল থেকে রাজ্জাকসহ পাঁচজন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। ঘটনাটিতে গুলশান থানায় মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর। মামলার এজাহারে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের বাইরে অপু নামের একজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় আরেকজনকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুনপ্রথমে পুলিশ নিয়ে বাসায়, পরে হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্যবিরোধী নেতারা ২৮ জুলাই ২০২৫

রাজ্জাক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। চাঁদাবাজির ঘটনায় জানে আলম ও আবদুর রাজ্জাক উভয়কে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।

পুলিশ জানায়, শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পর রাজ্জাকসহ কয়েকজন তা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। নিজের ভাগের পাঁচ লাখ টাকা রাজ্জাক তাঁর বাড্ডার ভাড়া বাসায় (মেস বাসা) রাখেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্ধার করে পুলিশ।

আরও পড়ুনচাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ জন ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ২ জন বহিষ্কার২৬ জুলাই ২০২৫

এর আগে গত বুধবার ডিএমপির এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজ্জাকের একটি ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার ৪টি চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এটি বাসাটি পশ্চিম রাজাবাজার এলাকায় অবস্থিত বলে গতকাল জানায় গুলশান থানা–পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয় রংপুর-৬ আসনের (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে।

আরও পড়ুনসমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি: আবদুর রাজ্জাকসহ চারজন সাত দিনের রিমান্ডে২৭ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ