বাংলাদেশে আ. লীগ থাকবে অথবা আমরা থাকব: হাসনাত আব্দুল্লাহ
Published: 16th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, এই বাংলাদেশে হয় আওয়ামী লীগ থাকবে না হয় আমরা থাকবো, এই বাংলাদেশে হয় ফ্যাসিবাদ থাকবে না হয় আমরা থাকব। বাংলাদেশে যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে হয় তাহলে সেটা আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে করতে হবে। যারা ভোটের জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করতে চান তারা জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বেঈমানি করছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আলিয়া মাদরাসা ও কওমী মাদরাসার আলেম ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দেবিদ্বার ইসলামীয়া ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো.
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে যেসকল রাজনৈতিক দল রয়েছেন আমরা আপনাদের অবদানকে স্বীকার করছি, আপনরা দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতন নিপীড়ন অত্যাচারে মধ্যে দিয়ে সময় পার করেছেন। মামলার ভয়ে এখানে সেখানে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। আপনারা কীভাবে এতো সহজে আওয়ামী লীগের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন ভুলে গেলেন? ভোট বাড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা না করে আওয়ামী লীগ যে এত বছর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তার বিচারের জন্য আওয়াজ তুলুন। আল্লাহর কসম করে বলছি, আপনারা যদি বিচারের জন্য আওয়াজ তুলেন আমরা প্রয়োজনে আবার রাস্তায় নামব। ফ্যাসিবাদ আর জুলুম যারা কায়েম করেছে আপনারা যদি তাদের পক্ষে দাঁড়ান তাহলে সেটা হবে মজলুমদের বিপক্ষে আপনার অবস্থান। আমরা আমাদের দেহের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাবো।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে সকলের অংশগ্রহণ থাকবে, যেখানে কোন বিভাজন থাকবে না, যে যাই করুক না কেন আমরা ইতিবাচক কাজে প্রতিযোগিতা করব।
এদিকে দুপুর ১টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে ‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসময় কর্মশালায় অংশ নেয়া শতাধিক শিক্ষার্থীকে বই উপহার দেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আওয় ম আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।