বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, এই বাংলাদেশে হয় আওয়ামী লীগ থাকবে না হয় আমরা থাকবো, এই বাংলাদেশে হয় ফ্যাসিবাদ থাকবে না হয় আমরা থাকব। বাংলাদেশে যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে হয় তাহলে সেটা আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে করতে হবে। যারা ভোটের জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করতে চান তারা জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বেঈমানি করছেন।  

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আলিয়া মাদরাসা ও কওমী মাদরাসার আলেম ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

দেবিদ্বার ইসলামীয়া ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো.

আলাউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে এবং মো. আল আমিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন দেবিদ্বার কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মুফতি আশরাফুল আলম উবাইদী, দেবিদ্বার উপজেলা জামে মসজিদের খতিব সালেহ আহম্মাদ মুনিরী, অধক্ষ কবির আহম্মেদ, মাওলানা আওলাদ হোসাইন মুরাদী, মাওলানা আব্দুল হক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোল‌নের দেবিদ্বার উপ‌জেলা সমন্বয়ক মুক্তাদির যারিফ সিক্ত প্রমুখ।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে যেসকল রাজনৈতিক দল রয়েছেন আমরা আপনাদের অবদানকে স্বীকার করছি, আপনরা দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতন নিপীড়ন অত্যাচারে মধ্যে দিয়ে সময় পার করেছেন। মামলার ভয়ে এখানে সেখানে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। আপনারা কীভাবে এতো সহজে আওয়ামী লীগের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন ভুলে গেলেন? ভোট বাড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা না করে আওয়ামী লীগ যে এত বছর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তার বিচারের জন্য আওয়াজ তুলুন। আল্লাহর কসম করে বলছি, আপনারা যদি বিচারের জন্য আওয়াজ তুলেন আমরা প্রয়োজনে আবার রাস্তায় নামব। ফ্যাসিবাদ আর জুলুম যারা কায়েম করেছে আপনারা যদি তাদের পক্ষে দাঁড়ান তাহলে সেটা হবে মজলুমদের বিপক্ষে আপনার অবস্থান। আমরা আমাদের দেহের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাবো। 

হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে সকলের অংশগ্রহণ থাকবে, যেখানে কোন বিভাজন থাকবে না, যে যাই করুক না কেন আমরা ইতিবাচক কাজে প্রতিযোগিতা করব। 

এদিকে দুপুর ১টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে ‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসময় কর্মশালায় অংশ নেয়া শতাধিক শিক্ষার্থীকে বই উপহার দেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আওয় ম আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

আরিফুলসহ সিলেট বিএনপির নেতাদের লন্ডন সফর, নানা আলোচনা

গত রোববার হঠাৎ লন্ডন সফরে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ নিয়ে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। শুধু আরিফুল নন, ইতোমধ্যে সিলেটের একাধিক নেতা প্রকাশ্যে বা গোপনে লন্ডন সফর করেন। শোনা যাচ্ছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করতেই তারা লন্ডন যাচ্ছেন।

সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে লন্ডন যান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যান উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী। তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিলেট-৬ আসনের (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দেশে এসেও নিবার্চনী এলাকায় সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে চলেছেন।  

সম্প্রতি লন্ডন থেকে দেশে ফিরে সিলেট-৪ আসনের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জমান সেলিম। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন  বলে জানা যায়।

একই আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম সম্প্রতি লন্ডন সফর করেন। তিনি দেশে ফিরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। একই আসনে আরও একাধিক নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
 
সর্বশেষ গত রোববার লন্ডনে যান আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি লন্ডনে যাওয়ার পর সিলেট বিএনপির রাজনীতি বইছে নতুন হওয়া। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দুটি মিশন নিয়ে গেছেন আরিফুল হক। এর একটি হচ্ছে- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া, অপরটি হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। লন্ডনে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি আপনাদের দেখতে এসেছি। ৪-৫ দিন লন্ডনে থাকবো।'

আরিফুল হক সিটি নির্বাচনে নাকি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, সার্বিক বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শ নিতে তিনি লন্ডনে গেছেন। তার পরামর্শ পাওয়ার পর সিলেটের নির্বাচনী মাঠে নামবেন তিনি। 

এদিকে, সোমবার রাতে লন্ডনে আরিফুল হক তার ঘনিষ্ঠ শতাধিক নেতাকর্মীকে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি বর্তমানে মাঠে থাকা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। কোনো রাজনৈতিক দলের নাম না বললেও নতুন রাজনৈতিক সংগঠনের কথা সরাসরি বলেন। তার বক্তব্য ঘিরে সিলেটে জামায়াত ঘরানার রাজনৈতিক নেতারা স্যোশাল মিডিয়ায় সরব হয়ে উঠেছেন।  কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, অন্য পার্টি বলতে সাবেক মেয়র আরিফ কি জামায়াতকে বোঝাতে চেয়েছেন? 

ভার্চ্যুয়াল মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়া ভিডিওতে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দু-একটা তুচ্ছ ঘটনাকে কিছু রাজনৈতিক অন্য পার্টি, অন্য প্ল্যাটফরমে যা আপনারা ভালোভাবেই বুঝতেছেন, যারা এখনই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, বিভিন্ন হাই-অফিসিয়াল পোস্টে তাদের নিজেদের লোক সেটআপ করে ফেলছে। সেখানে আমাদের মানুষগুলো নেই। আমাদের দু-চার জন অ্যাটর্নি জেনারেল, আর দু-চারটা পোস্ট দেখলেই মনে করবেন না সব আমাদের। তারা ভালো করে জানে ভোটে গেলে বিএনপি’র সঙ্গে কোনোভাবেই রিটার্ন করতে পারবে না। কাজেই তারা ওই ম্যাকানিজম শুরু করেছে সেখানে নির্বাচনকে একটু দূরে ঠেলে দিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনে তাদের লোকগুলোকে সেটআপ করা।' 

সম্পর্কিত নিবন্ধ