ঋণ খেলাপি নির্ধারণে সময়সীমা বাড়ানোর চিন্তা বাংলাদেশ ব্যাংকের
Published: 16th, January 2025 GMT
ঋণ খেলাপির সময়সীমা ৩ মাস থেকে বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
ঢাকা চেম্বারের ব্যবসায়িরা গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঋণ খেলাপির সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানালে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায়। এ সময় ডিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো.
আরো পড়ুন:
আমানত বেড়েছে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর
অর্থ উপদেষ্টা সৌদি আরব যাচ্ছেন শনিবার
নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ৩ মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার পর সব ধরনের ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণিকরণ করা হবে। বর্তমানে ৬ মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকা ঋণ শ্রেণিকরণ করা হয়।
গভর্নর বলেন, “বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ইতিবাচক। রপ্তানি আয় ঊর্ধ্বমুখী এবং রিজার্ভ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সুফল দ্রুত আমরা ভোগ করতে পারব। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করতে হবে উদ্যোক্তাদের।”
গভর্নর বলেন, “সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগামী জুন-জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা যায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদের হার বাজার পর্যালোচনার ভিত্তিতে আরো হ্রাস করা সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন, “রমজান মাসে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানিতে কোনো ধরনের মার্জিন ছাড়াই এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “এ মুহূর্তে বাজারে ডলারের তেমন কোনো সংকট নেই। ডলারের মূল্য বেশ স্থিতিশীল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য নির্ধারণ করবে না। এটা নির্ধারিত হবে ডলারের আমদানি ও চাহিদার ভিত্তিতে।”
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, “সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের অর্থনীতি বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এছাড়া ভ্যাট এবং ট্যাক্স হার বাড়নোর সিদ্ধান্তে এই অবস্থা আরো চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।”
তিনি বলেন, “ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যয় ক্রমাগত বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সুদ হার সহনীয় পর্যায়ে রাখলে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও হ্রাস পেতে পারে। সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের সুবিধা পেতে প্রায় ৩১টি ডকুমেন্ট দিতে হয়। এ কারণে তারা অনেক সময় ঋণ সুবিধা প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হয়।”
বিষয়টি সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি দাবি জানান তিনি। ব্যাংক ঋণের শ্রেণিকরণের সময়সীমা ৩ মাস হতে কমপক্ষে ৬ থেকে ৯ মাস করার দাবি জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি। এছাড়া দেশের বাইরে ব্যবসায়িক অফিস স্থাপনের বিদ্যমান কঠোর নীতিমালা কিছুটা শিথিল করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়বে। সেই সাথে বেগবান হবে অর্থনীতি। তাছাড়া দেশের সামগ্রিক আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়বদ্ধতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সময়স ম ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে হামলা: ট্রাম্প ৬০ দিনের সময়সীমার কথা বলছেন, সেটি কী?
ইরানকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিনই দেশটিতে ভয়াবহ হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল। আজ শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই ওই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি চুক্তিতে রাজি হতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিতে পৌঁছাতে ওয়াশিংটন–তেহরান আলোচনা সফল করতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইরান চুক্তি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ১২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। সেদিন থেকেই এই ৬০ দিনের সময়সীমা গণনা শুরু হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ জুন ইসরায়েল হামলা চালাল ইরানের অন্তত ৮টি শহরে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ সিএনএনের সাংবাদিক ডানা বাসকে বলেন, ‘আমার কথা শোনা উচিত ছিল ইরানের। যখন আমি বলেছিলাম—আপনি জানেন, আমি ওদের ৬০ দিনের এক সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম, আপনি জানেন কি না, জানি না, কিন্তু আমি ওদের ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলাম, আর আজ ৬১তম দিন।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উদ্দেশে পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প ইরানকে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
বছরের শুরুর দিকে ফক্সনিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিঠির প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, ইরান আলোচনায় আসবে—আমি তাদের চিঠি লিখে জানিয়েছি, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, আমাদের যদি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে সেটা ইরানের জন্য ভয়াবহ হবে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, সেটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।’
ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং আলোচনায় জড়িত ব্যক্তিরা জানতেন যে সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন, ৬০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও আলোচনা চলবে। কিন্তু এখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর হামলা চালানোর পর এই আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে—যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।