Samakal:
2025-08-01@21:59:32 GMT

বলিউডে ‘খান’ কেন টার্গেট

Published: 18th, January 2025 GMT

বলিউডে ‘খান’ কেন টার্গেট

ভারতের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে এখন আলোচনার প্রধান একটি বিষয় হয়ে উঠেছে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর দুর্বৃত্তের হামলা। বুধবার মধ্যরাতে সাইফের মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে দুর্বৃত্তের আগমন এবং আচমকা অভিনেতাকে হামলা করার বিষয়টি নানা প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসছে।

আক্রমণে প্রাণে বেঁচে গেলেও এখন পর্যন্ত মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালের বিছানায় পড়ে আছেন সাইফ। এরই মধ্যে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। শরীর থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়েছে ধারালো অস্ত্রের অংশবিশেষ। কে এবং কী কারণে এ হামলা চালিয়েছে– সে প্রশ্ন নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

অন্যদিকে এমন অতর্কিত হামলার শিকার হওয়া নিয়ে যেমন উঠছে নিন্দার ঝড়, তেমনই প্রশ্ন উঠছে তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে। বিশেষ করে সাইফের সূত্র ধরে পুলিশ প্রশাসন বলিউড খানদের ওপর আক্রমণের বিষয়টি আলাদাভাবে তুলে এনেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, সাইফ আলি খানের ওপর অতর্কিত হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে আক্রমণকারীকে ধরে ফেলেছে মুম্বাই পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর তদন্ত করতে গিয়ে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা চমকে দিয়েছে সবাইকে। তদন্তকারীদের বরাত থেকে জানা গেছে,  শুধু সাইফ নন, দুর্বৃত্তের নিশানায় ছিল শাহরুখ খানের বাড়িও। সাইফের বাড়িতে হামলা করার দু’দিন আগেই নাকি বান্দ্রায় বলিউড বাদশাহ শাহরুখের বাড়ি মান্নাতেও হানা দিয়েছে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি। বাড়ির অন্দরে প্রবেশ না করলেও বাইরে থেকে চারপাশ দেখে এসেছিল সেই ব্যক্তি।

মনে করা হচ্ছে, সাইফের দুষ্কৃতই মান্নাতের চারপাশ রেকি করতে পৌঁছেছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শাহরুখের বাড়িতেও মুম্বাই পুলিশের একটি দল গেছে। জানা যাচ্ছে, ঘটনার দু’দিন আগেই মান্নাতের সামনে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। সে ৬ থেকে ৮ ফুটের একটি লোহার মই বেয়ে মান্নাতে প্রবেশ করার চেষ্টাও করে। তদন্তকারীদের কাছ থেকে পাওয়া এ তথ্য কতটা সঠিক, তা এখন সময়ই বলে দেবে। সাইফকাণ্ড ঘিরে যে বিষয় জনমনে সন্দেহ বাড়াচ্ছে, তা হলো আক্রমণকারীদের টার্গেট ‘খান’ তারকারা। কারণ, একটু পেছনের ঘটনাগুলোয় নজর দিলে এ সন্দেহ প্রকট হয়ে ওঠে। 

দেশ ও সামাজিক অসংগতি নিয়ে আমির খানের প্রশ্ন, বিনিময়ে পাওয়া মৃত্যুর হুমকি
ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকার গঠনের পর থেকে হিন্দুত্ববাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে। গোঁড়া হিন্দু অনেকে নানা বিষয়ে মুসলমানদের হেনস্তা এবং তাদের সন্ত্রাসবাদী ও দেশদ্রোহী বলতেও দ্বিধা করেনি। এমনকি যে অভিনেতা কখনও ধর্মীয় কোনো বিষয়ে কোনো ধরেনর কটু কথা বলেননি, সেই আমির খানও রেহাই পাননি। সামাজিক অসংগতি নিয়ে নির্মিত টিভি সিরিজ ‘সত্যমেব জয়তে’র শুটিংয়ের সময় হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল আমির খানকে। সে কারণেই এ অভিনেতা তাই নিজের সুরক্ষার জন্য বুলেটপ্রুফ মার্সিডিজ কিনতে বাধ্য হয়েছিলেন। অভিমত প্রকাশ করেছিলেন, নিজ দেশে তিনি আর নিরাপদ নন। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা না পেলে দেশ ছাড়ার কথাও বলেছিলেন; যা নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও নানা ঘটনা ডামাডোলে সেই বিতর্ক কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। নিজ মন্তব্যের জেরে আমিরের শত্রু বনে গিয়েছিলেন যারা, তারা যে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন, এটি মনে করেন না আমির নিজেও।

সালমান খানের মাথার ওপর ঝুলছে মৃত্যুর খড়্গ
২৬ বছর আগে ‘হাম সাত সাত হ্যায়’ সিনেমার শুটিংয়ে গিয়ে কৃষ্ণকায় হরিণ শিকার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল সালমান খানের বিরুদ্ধে; যা নিয়ে বহুবার আদালতে চক্কর কাটতে হয়েছে এ বলিউড সুপারস্টারকে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো– হরিণ শিকারকে কেন্দ্র করে এখনও প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে আসছেন সালমান। এক রকম মৃত্যুর খড়্গ মাথার ওপর ঝুলিয়ে রেখেছে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দল। তাদের দাবি, যে কৃষ্ণকায় হরিণকে তাদের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ সৃষ্টিকর্তার দূত হিসেবে গণ্য করেন, সেই হরিণ শিকার করার অপরাধ কোনোভাবেই ক্ষমা করবেন না। যদিও লরেন্স বিষ্ণোই এখন ভারতের জেলে, তার পরও তাঁর নেটওয়ার্কের পান্ডারা দেশের নানা প্রান্তে খুনখারাবি চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু এই অভিনেতা নন, একই সঙ্গে তাঁর বাবা তথা খ্যাতিমান লেখক ও চিত্রনাট্যকার সেলিম খানকেও হুমকি দিয়েছে বিষ্ণোই গ্যাং। এ ছাড়াও সালমানের বাসা বান্দ্রার গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে আততায়ীরা একবার কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল। এর পর তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়। বিশেষ করে বাবা সিদ্দিকের হত্যাকাণ্ডের পর বলিউড ভাইজানখ্যাত সালমানের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। তার পরও সালমান বিষ্ণোই গ্যাংয়ের কাছে কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। 

বলিউড বাদশাহ শাহরুখও নিরাপদ নন
আমির, সালমানের মতো নিজ দেশে নিরাপদ নন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান। মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডের পক্ষ থেকে একাধিকবার মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন এ অভিনেতা। প্রথম হুমকি এসেছিল মাফিয়াদের কথা অনুযায়ী কাজ না করার জন্য। শাহরুখ সাহসিকতার সঙ্গে তাদের সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেও সেবার কোনো অঘটন ঘটেনি। কারণ, তখনও শাহরুখ বলিউড বাদশাহ হয়ে ওঠেননি। পরবর্তী সময়ে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবে শাহরুখ যখন প্রথম সারিতে চলে আসেন, তখন আবার এই অভিনেতার দরজায় কড়া নাড়া শুরু করেছিল মাফিয়ারা। তাঁর কাছে ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ সিনেমা থেকে আয় করা অর্থের কিছু অংশ দাবি করে বসেছিল। সেবার শাহরুখ নির্ভয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি কোনোভাবেই তাদের কোনো টাকাপয়সা দেবেন না। এতে তারা যদি আক্রমণ করতে চায়, করতে পারে– তিনি ভয় পান না। এমন জবাব পেয়ে মাফিয়ারা পিছিয়ে গিয়েছিল ঠিকই; রোষ যে এতটুকু কমেছে, তার কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। কারণ, সেই ঘটনার পর আরও একবার গত বছরের নভেম্বরে ফোনে হুমকি পেয়েছেন শাহরুখ। ভারতীয় পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, সেই ফোনটি এসেছিল ছত্তিশগড় থেকে। কিন্তু হুমকিদাতাকে সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারা যায়নি। কারণ, তার ফোন নম্বরের কাগজপত্র ছিল জাল। এও জানা যায়নি, হুমকিদাতা কোনো মাফিয়া সদস্য কিনা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র পদ র ওপর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ