শীতকাল হার্টের রোগীদের জন্য সুবিধাজনক নয়। এসময় হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বেড়ে যায়, তেমনি বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও। কেননা শীতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের প্রয়োজন বেড়ে যায়। আর এ সময় রক্তনালি সরু হয়ে যায়। সরু রক্তনালি দিয়ে হৃদযন্ত্রে কম পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছায়। এতেই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

শীতকালে সুস্থ থাকতে জীবনযাপনে অনিয়ম না করে, নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হবে। মানতে হবে কিছু নিয়ম। পাশাপাশি কিছু লক্ষণ দেখলে সচেতন হতে হবে। 

১.

সকালে ঘুম থেকে উঠেই অত্যধিক ক্লান্ত অনুভব করলে সচেতন হোন। সারা রাত পর্যাপ্ত ঘুমিয়েও ক্লান্ত হয়ে পড়া স্বাভাবিক বিষয় নয়। 

২. শীতকালে বার বার কফি পানও ডেকে আনতে পারে বিপদ। রক্তচাপের সমস্যা থাকলে দিনে দুই বারের বেশি কফি পান না করা ভালো। 

৩. হার্ট অ্যাটাকের আরও একটি লক্ষণ হল সকালের দিকে বুকে হালকা অস্বস্তি অনুভব। বুকে ব্যথা কিংবা হালকা চাপ অনুভূত হলে এড়িয়ে যাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৪. মাথা ঘোরা অত্যন্ত সাধারণ একটি সমস্যা। তবে শীতকালে সকালের দিকে মাথা ঘোরার সমস্যাকে একটু বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। এড়িয়ে গেলে বিপদ হতে পারে।

৫. সুস্থ থাকতে শীতে নিয়মিত শরীরচর্চা, যোগব্যায়াম করুন। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এই সময়ে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগেন অনেকে। রোজ শরীরচর্চা করলে এসব সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ