জগন্নাথের জোবায়েদকে হত্যা: সন্দেহভাজনকে থানায় দিলেন মা
Published: 20th, October 2025 GMT
ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যায় প্রধান সন্দেহভাজন মাহির রহমানকে আজ বংশাল থানায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন তার মা। মাহিরের খালু ইমরান শেখকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয় পুলিশ। এই ঘটনায় মাহিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, প্রেমের কারণে এই হত্যাকাণ্ড। জোবায়েদের পরিবার মামলা করতে চাইলেও, পুলিশের পরামর্শে সেটি এখনো হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ৯৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পরও ট্রাম্প বললেন, যুদ্ধবিরতি টিকে আছে
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলের নৃশংসতা কমছে না। গাজায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাবে, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ১১ দিনে উপত্যকাটিতে অন্তত ৯৭ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এরপরও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি টিকে আছে।
গাজায় গণমাধ্যম দপ্তর থেকে আজ সোমবার প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি চলাকালে এই হত্যাকাণ্ডসহ ৮০ বার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এই লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে গাজাবাসীর ওপর সরাসরি গুলি, কামান ও ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ এবং আকাশপথে হামলা। একই সময়ে গাজার অনেক বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আজও গাজার মধ্যাঞ্চলে দেইর আল–বালাহ, দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিস ও উত্তরে সুজাইয়া এলাকায় বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। এদিন ইসরায়েলের হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র। আর ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘হলুদ সীমা’ অতিক্রম করা কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা।
যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় যে সীমা বরাবর ইসরায়েলি বাহিনী সরে এসেছে, তাকে ‘হলুদ সীমা’ বলা হয়। এই সীমানা পেরোনোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ফিলিস্তিনিদের। গাজার বাসিন্দারা বলছেন, এই সীমা ম্যাপে থাকলেও বাস্তবে ঠিক কোথা থেকে তা শুরু হয়েছে, বোঝার উপায় নেই। তবে রোববার ইসরায়েলের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে বুলডোজার দিয়ে এই সীমানা তৈরির কাজ করতে দেখা গেছে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যে গাজায় সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয় রোববার। দক্ষিণ গাজার রাফায় হামাস ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালিয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে এদিন অন্তত ৩৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। যদিও ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে হামাস। আর রোববারের হামলার পর আবার যুদ্ধবিরতিতে ফেরার কথা বলা হয় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে।
এই নৃশংসতার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি আদৌ টিকে আছে কি না, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য থেকে উড়োজাহাজে করে ওয়াশিংটনে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, টিকে আছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে হামাসকে সঙ্গে নিয়ে এই যুদ্ধবিরতি খুবই শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাবে।’
ট্রাম্প যতই আশ্বাস দিক না কেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফিলিস্তিনিদের শঙ্কা কাটছে না। রোববার ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে গাজা নগরীর বাসিন্দা আবু আবদাল্লাহ বলেন, ‘মনে হচ্ছিল, যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেছে। গতকাল রোববার যা হয়েছে, তারপর ভয়ে খাবার কিনতে বাজারে ভিড় করেন ফিলিস্তিনিরা। সুযোগ পেয়ে লোভী ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি খুবই নড়বড়ে।’
দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা
গাজায় ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ চলছে। এই ধাপে ২০ জন জীবিত জিম্মিকে ইসরায়েলের কাছে ফেরত দিয়েছে হামাস। মৃত ২৮ জিম্মির মধ্যে ১২ জনের মরদেহও ফেরত দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর জন্য ট্রাম্পের জামাতা জেরাড কুশনার ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জোর দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল মঙ্গলবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইসরায়েল সফর করবেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গতকাল তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে হামাসকে নিরস্ত্র করার কথা বলা হচ্ছে। তবে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার আগে গাজার নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির শেষ ধাপে গাজা পুনর্গঠনে ৫০ বিলিয়ন ডলার লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন স্টিভ উইটকফ। সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে তিনি বলেন, এই অর্থটা হয়তো কমবেশি হতে পারে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোর জন্য এই তহবিল দেওয়াটা বেশি কিছু নয়। যদিও উইটকফের সঙ্গে দ্বিমত করে অনেক অধিকারকর্মী বলছেন, গাজা পুনর্গঠনের অর্থ ইসরায়েলকে দিতে হবে।
এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন নিয়ে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য হামাসের প্রতিনিধিদল আজ কায়রোয় পৌঁছেছে। এ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হামাস নেতা খলিল আল–হায়া। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন দলগুলোকে একই ছাতার নিচে নিয়ে আসার জন্য একটি সংলাপের বিষয়ে আলোচনার জন্য মিসরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথাও রয়েছে তাঁদের।