দেড় বছরের ছেলে নিয়ে মেঘনায় ঝাঁপ দিলেন মা
Published: 19th, January 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে স্বামী মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলায় অভিমান করে দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন মাইমুনা বেগম সুখী নামের এক নারী। মা বেঁচে গেলেও মারা গেছে শিশু পুত্র ইব্রাহিম।
আজ রোববার দুপুরে বেতুয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন প্রশান্তি পার্ক এলাকায় মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেন ওই নারী। পরে স্থানীয় দুই যুবক মা-ছেলেকে নদীতে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। পরে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটি মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইব্রাহিম জিন্নাগড় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহিমের ছেলে। ওই নারী চরফ্যাসন পৌরসভা শরিফপাড়া এলাকার মো.
প্রত্যক্ষদর্শী শাকিল জানান, দুপুরে ওই নারী ছেলেকে কোলে নিয়ে বেতুয়া প্রশান্তি পার্কের মেঘনা নদীর পাড়ে বসেছিলেন। কিছুক্ষণ পরে দেখতে পান ওই নারী ছেলেসহ নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় মা-ছেলেকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে যান। পথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
সুখীর মা তাছনুর জানান, ৪ বছর আগে আবদুর রহিমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার মেয়ে বিয়ে দেন। প্রথম সন্তান জন্মের পরপরই জামাই রহিম ও তার পরিবারের সদস্যরা মেয়েকে মানুষিক নির্যাতন শুরু করেন। আজ দুপুরে মেয়ে-জামাই আমাকে ফোনে জানতে চান মাইমুনা আমার বাড়িতে আসছে কি না? পরে খবর পান, মেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে।
সুখীর স্বামী রহিম বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। কিন্তু এ কারণে সে এমন কাজ করবে তা ভাবতে পারিনি।
চরফ্যাসন থানার উপ-পরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিন জানান, নিহত শিশুর পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি