ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শহীদ সাহাব উদ্দিন ছাত্রাবাসে আসন বরাদ্দপ্রাপ্ত ছাত্রদের বাধ্যতামূলকভাবে ডোপ টেস্ট (রক্তে মাদক পরীক্ষা) সনদ জমা দিতে হবে। এ পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হলে আসন বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ। 

গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) হোস্টেল সুপারের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে আসন বরাদ্দপ্রাপ্তির আবেদনের জন্য প্রদত্ত শর্তসমূহে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।

ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শহীদ সাহাব উদ্দিন ছাত্রাবাসে চলতি মাসের ৩০ তারিখ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমিত সংখ্যক আসন বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ। রবিবার ও সোমবার (১৯ ও ২০ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের আসন পেতে ছাত্রাবাসের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। তবে হোস্টেলে আসন পেতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে ডোপ টেস্ট সনদ জমা দিতে হবে। 

আরো পড়ুন:

কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

লালমনিরহাটে পুষ্টি ক্যান্টিন কর্মসূচির উদ্বোধন

ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শহীদ সাহাব উদ্দিন ছাত্রাবাসের সহ-সুপার মো.

আতিকুর রহমান বলেন, “ভালো কিছু শুরু করার লক্ষ্যেই মূলত এই সিদ্ধান্ত। মাদক নির্মূলের প্রচেষ্টা ও মাদকমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়ার জন্য ডোপ টেস্টের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” 

ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শেখ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এখানে যোগদানের পর থেকে ছোট ছোট কিছু ইতিবাচক কাজ করার চেষ্টা করছি। তারই ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে সাধারণত দূর-দূরান্ত থেকে অভিভাবকরা সন্তানদের পড়ালেখার জন্য পাঠান। চলার পথে অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে যায়।” 

তিনি বলেন, “এ ধরনের আসক্তিতে জড়ালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একটি জটিল প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে- বিষয়টি মাথায় থাকলে একজন শিক্ষার্থী এ ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়বে না। ডোপ টেস্টে অনুত্তীর্ণ হলে আসন বরাদ্দ বাতিল করা হবে। মাদক নির্মূলে সবার সহযোগিতা নিয়ে আমাদের এ ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।” 

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ