জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা এবং কন‌্যা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের বিরুদ্ধে পৃথক তিন‌টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইস‌ঙ্গে অবৈধ সম্প‌দ অর্জনের অভি‌যো‌গে বাহাউদ্দীন বাহারের অপর দুই কন‌্যার সম্পদ বিবরণী চে‌য়ে নো‌টিশ জা‌রি করে‌ছে সংস্থা‌টি।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবা‌গিচায় দুদকের প্রধান কার্যলে‌য়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ‌্য জানিয়ে‌ছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।

তিনি জানান, সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। তার ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ২৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ টাকা লেনদেন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ এর (২) ধারা ও মানিলন্ডারিং আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় মামলা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলায় সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারকে আসামি করা হয়েছে। তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তার ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া হয়েছে।

তৃতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন সাবেক এমপি বাহাউদ্দীন বাহার ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা। গৃহিনী হয়ে স্বামীর অবৈধ সম্পদ বৈধ করার চেষ্টার অভিযোগে মেহেরুন্নেছার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এছাড়া, বাহাউদ্দিন বাহারের অপর দুই মেয়ের মধ্যে আয়মান বাহারে বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও আজিজা বাহারের বিরুদ্ধে ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক। তথ্যের যথার্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরুপণের জন্য তাদের প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারা মোতাবেক পৃথক পৃথক সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করেছে দুদক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ