নয় ম্যাচে মাত্র দুই জয়। এখনও তিন ম্যাচ বাকি। বিপিএলের প্লে’অফ নিশ্চিতে তিন ম্যাচই জিততে হবে ঢাকা ক্যাপিটালসকে। যদি তিন ম্যাচ জিতে তাহলে পাঁচ জয় নিয়ে পয়েন্ট হবে ১০।
১০ পয়েন্ট হলেই যে প্লে’অফ নিশ্চিত হবে তেমনটা নয়। অন্য দলগুলোর সমীকরণকেও মাথায় রাখতে হবে। তবে আশা এখনই ছাড়ছে না ঢাকা ক্যাপিটালস। বিপিএলের নবাগত দলটি শেষ চারের আশাতেই শেষ তিন ম্যাচ মাঠে নামবে বলে জানালেন দলের অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। সোমবার (২০ জানুয়ারি, ২০২৫) অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পেরেরা ঢাকাকে জিতিয়েছেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে আসেন সংবাদ সম্মেলনে।
সেখানে দলের প্লে’অফের সম্ভাবনার কথা জানাতে গিয়ে পেরেরা বলেছেন, ‘‘আমি খুবই খুশি। কয়েকটি ম্যাচ হারার পর এই জয়টি আমাদের দরকার ছিল। সামনের পরিস্থিতি নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না। সামনে তিনটি ম্যাচ যদি জিততে পারি, ১০ পয়েন্ট হবে। ক্রিকেটে কী হয়, কেউ বলতে পারে না। এজন্যই ক্রিকেট খেলাটা দারুণ। আজকের জয় নিয়ে আমি খুশি।”
আরো পড়ুন:
১৯২ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ল চিটাগং
মানুষ তামিমকে দোষ দিয়ে মজা পায়: মালান
“আমরা যদি এভাবে খেলতে থাকি… এই দলের সম্ভাবনা আমি জানি। ১০ পয়েন্ট হয়ে গেলে যে কোনো কিছুই হতে পারে। এভাবে খেলতে থাকলে আমাদের ভালো সুযোগ আছে।” – যোগ করেন ঢাকার অধিনায়ক।
সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৬ রানে হারিয়েছে ঢাকা। আগে ব্যাটিং করতে নেমে ঢাকা ৬ উইকেটে ১৯৬ রান করে। সিলেট দারুণ জবাব দেওয়ার পরও ১৯০ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭ বলে ৩৭ রান করেন থিসারা। পরবর্তীতে বল হাতে পান ২ উইকেট। ক্যাচ নিয়েছেন ১টি। পারফেক্ট দিন কাটিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন। লিটনের সঙ্গে তার ২৮ বলে ৮১ রানের জুটিতে ঢাকার ইনিংসের চিত্র পাল্টে যায়।
ম্যাচ নিয়ে থিসারার ব্যাখ্যা, ‘‘ম্যাচের শুরুতে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য একটু কঠিন ছিল। এজন্য আমরা উইকেট ধরে রেখেছি। মৌলিক কাজ করে গেছি। ব্যাটিং লাইন আপের পরের দিকে তো আমাদের পাওয়ার হাউজ আছেই। আগের দিনও খেয়াল করেছিলাম, দিনের ম্যাচে উইকেট মন্থর থাকে। আমরা ১৬০ রানের কথা ভাবছিলাম। সঠিক লেংথে বল করলে এটা ১৬০ রানের উইকেট। লিটনকে এটাই বলেছিলাম যে, কোনো ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন নেই, নিজেদের জোনে বল পেলে শট খেলা যাবে।”
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।