ফৌজদারি মামলার আসামি সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক পদে থাকতে পারবেন কিনা– এ প্রশ্ন তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর বিরুদ্ধে সরকার আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে কিনা, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানাতে চায়।

সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল। ডব্লিউএইচও কোন প্রক্রিয়ায় সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফৌজদারি মামলার কোনো আসামি ডব্লিউএইচওতে কর্মরত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকার কী করতে পারে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এর আইনগত দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দুদকের এক পদস্থ কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী দুদকের মামলার আসামি হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অথবা দপ্তরে চিঠি পাঠায় দুদক। সেই প্রক্রিয়ায় পুতুলের আসামি হওয়ার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতে চায়।’
পুতুল সরকারি কর্মকর্তা নন। তিনি ডব্লিউএইচওতে কর্মরত। দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে ডব্লিউএইচওতে সরকার চিঠি পাঠাতে পারে কিনা– তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।

এদিকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লট নেওয়ার অভিযোগে পুতুলকে প্রধান আসামি করে গত ১২ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সহযোগী আসামি করা হয়। মোট আসামি করা হয় ১৬ জনকে।
মামলায় বলা হয়, রাজউকের বিধান লঙ্ঘন করে আসামির অনুকূলে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। শেখ হাসিনার নির্দেশে তাঁর কার্যালয়ের মাধ্যমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করা হয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় চিঠির মাধ্যমে রাজউকের চেয়ারম্যানকে প্লট বরাদ্দের জন্য নির্দেশ দেয়। পুতুলকে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধি-৯ প্রতিপালন করার কথা। অথচ বিশেষ অনুগ্রহ ও অবৈধ প্রাপ্তি হিসেবে প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া ও নেওয়া হয়েছে। আসামিরা জালিয়াতির মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ