যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের ধূমপান করতে নিষেধ করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারপিট করা হয়েছে। এই ঘটনার জের ধরে সোমবার রাতে কলেজের আসাদ হল সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। দুই ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) জুয়েল ইমরান বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। শিক্ষার্থীরা সবাই ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।

জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার দিকে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের শহীদ আসাদ হল এলাকায় দু’জন বহিরাগত ধূমপান করছিলেন। এ সময় তাদের ধূমপানে নিষেধ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করে ওই বহিরাগত দু’জন। খবর পেয়ে আসাদ হল ছাত্রদলের নেতকর্মীরা এগিয়ে আসে। এ নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় খড়কি এলাকার সাগর নামে একজন তার অনুসারী ৪০ থেকে ৫০ জনকে নিয়ে আসাদ হল লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। তখন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ইটপাটকেলে অন্তত তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে শিক্ষার্থীদের মারধর এবং আসাদ হলে হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় জেলা যুবদল, ছাত্রদল ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রাত ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের মারপিট ও আসাদ হলে ইটপাটকেল নিক্ষেপকারীদের শাস্তির দাবিতে মিছিল বের করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে সাগর ছিনতাই, মাদক সেবন, বেচাকেনাসহ আশেপাশের ছাত্রাবাসগুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করত। সোমবার ক্যাম্পাসে কিছু ছেলেকে মারধর করে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

কলেজের অধ্যক্ষ ড.

খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, কী হয়েছে আমি বলতে পারছি না। আপনারা সাংবাদিক পাঠিয়ে খবর নেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ছ ত রদল র ন ত পর স থ ত কর ম র ন ত কর এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ