বাংলাদেশের ফুটবলে বয়স নিয়ে লুকোচুরির গল্প অজানা নয়। বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় সাফল্যের জন্য বয়স কমিয়ে ফুটবলারদের পাসপোর্ট তৈরি করা দেশের ফুটবলে ওপেন সিক্রেট। সেটা শুধু বয়সভিত্তিক সাফেই নয়, ঘরোয়া আসরগুলোতেও এই অনিয়ম হয় হরহামেশা। বয়স লুকোচুরির বিষয়গুলো জানা সত্ত্বেও কোনো এক অজানা কারণে তা এড়িয়ে যেতে দেখা গেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের। রহস্যজনকভাবে বেশি বয়সী ফুটবলার মেডিকেল পরীক্ষায় পাসও করেন। বাফুফেতে নতুন কমিটি আসার পর এখন পর্যন্ত বয়সভিত্তিক কোনো প্রতিযোগিতা হয়নি। 

সোমবার ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রথম সভার পর বিষয়টি কঠোরভাবে নেওয়া হবে বলে জানান বাফুফে সহসভাপতি ও কমিটির চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, ‘এর আগে আমাদের নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ফুটবলারদের বয়স নিয়ে যে অভিযোগ ওঠে, সেটা রোধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। বয়স নির্ধারণ করার একটা মেডিকেল পদ্ধতি আছে। এবার কঠোরভাবে সেই পদ্ধতি আমরা অনুসরণ করব। যাতে এই সংকটটা আমাদের না আসে। তাতে জিতলে আমরা জিতব, হারলে অসুবিধা নেই। ডেভেলপমেন্ট করে পরেরটা জিতব।’

বয়সভিত্তিক বিভিন্ন ক্যাটেগরির সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে সাফল্যে ভাসে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কল্যাণীতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় হয়েছিল বাংলাদেশ। বয়স লুকিয়ে সেই আসরে খেলার প্রমাণ পরে বের হয় কাতারে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাই পর্বে। বয়স বেশি হওয়ার কারণে অধিকাংশ ফুটবলার এই প্রতিযোগিতায় খেলতে যেতে পারেননি। শুধু সেই আসরই নয়, এ রকম আরও অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বয়স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

দীর্ঘদিন দেশের ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় নারী দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বর্তমানে বাফুফে এলিট একাডেমির প্রধান কোচের ভূমিকায়। বিদেশি দলগুলো বয়স নির্ধারণে কতটা কঠোর, তার একটা উদাহরণ গতকাল সমকালের কাছে এভাবে দিয়েছেন তিনি, ‘অতীতে মালয়েশিয়াতে ক্লাব পরিদর্শনে গিয়েছিলাম আমি। সেখানে একটা টুর্নামেন্ট দেখেছিলাম অনূর্ধ্ব-৯ ও অনূর্ধ্ব-১১-এর। ৯-এ খেলছে সাড়ে আট বছর বয়সী আর ১১তে সাড়ে ১০ বছর বয়সের ফুটবলাররা। এ ক্ষেত্রে আমাদের সবারই ঠিক হতে হবে। ফেডারেশন তো একা চেষ্টা করে কিছু করতে পারবে না। এখানে গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে সবারই স্বচ্ছ হতে হবে।’ ভবিষ্যতে সেই স্বচ্ছতা এলেই হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ফ টবল ফ টবল র বয়স ন র বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ