রেস্তোরাঁ, পোশাক, মোবাইল ফোন সেবায় ভ্যাট কমছে
Published: 22nd, January 2025 GMT
ভ্যাট বাড়ানোর দুই সপ্তাহের মধ্যে কিছু পণ্য–সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক কমাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ তালিকায় রয়েছে ফোন সেবা, রেস্তোরাঁ, নিজস্ব ব্র্যান্ডের পোশাক, মিষ্টি, নন–এসি হোটেল, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি।
আজ বুধবার এ–সংক্রান্ত চারটি আদেশ জারি করেছে এনবিআর। এনবিআরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতে এসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে না।
মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবা
মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিফোন সেবায় (টক টাইম, ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি) সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছিল। এই সম্পূরক শুল্ক হার এখন আগের জায়গায় ফেরত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ইন্টারনেট সংস্থার (আইএসপি) সেবার ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রেস্তোরাঁ বিল
আগের মতোই রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হবে। রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল নতুন অধ্যাদেশে। এখন বাড়তি ভ্যাট হার প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পোশাক, মিষ্টি ও অন্যান্য
রেস্তোরাঁর মতো তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রেও ভ্যাট কমানো হয়েছে। নিজস্ব ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যতীত অন্যান্য পোশাক বিক্রির ক্ষেত্রে ভ্যাট হার করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ। নতুন করে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের আগে এ হার সাড়ে ৭ শতাংশই ছিল। ৯ জানুয়ারি যা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। এখন বাড়তি সেই হার প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে বাড়তি ভ্যাট থাকছে ব্র্যান্ডের পোশাকের ক্ষেত্রে। এ হার করা হয়েছে ১০ শতাংশ। ৯ জানুয়ারির আগে তা ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ।
এ ছাড়া নন-এসি হোটেলের ওপর ভ্যাট হার ১৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। অন্যদিকে মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপের ভ্যাটেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখানেও ১০ শতাংশ ভ্যাট করা হয়েছে।
ওষুধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাটের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল। এখন বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এতে ওষুধের দাম বাড়বে না বলে মনে করে এনবিআর।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে ৯ জানুয়ারি এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো হয়। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে হঠাৎ বিপুলসংখ্যক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বাড়ানোর এ সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনও ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যাম্পাসে বিনা মূল্যে রাউটার ও ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে বিটিসিএল, পাবেন যেভাবে
সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস (মেগাবিট পার সেকেন্ড) ইন্টারনেট দেবে; সঙ্গে বিনা মূল্যে রাউটার দেবে তারা।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিটিসিএলের ইন্টারনেট–সেবার বিষয়ে একটি পোস্ট দেন।
সেখানে বিটিসিএলের নতুন প্যাকেজটি তুলে ধরেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও হোস্টেলে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্যাকেজ দেবে বিটিসিএল।
জিপন নামে বিটিসিএলের প্যাকেজের আওতায় ক্যাম্পাস–১৫ নামের একটি ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করা হচ্ছে। এতে ১৫ এমবিপিএস গতিতে মাসিক ৫০০ টাকায় ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট দেওয়া হবে। সেবাটি শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বিটিসিএল টেলিফোন সেবা পরিচালনাকারী সরকারি সংস্থা। ২০০৮ সালের আগে এটি বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বোর্ড (বিটিটিবি) নামে পরিচিত ছিল। পরে একটি কোম্পানিতে পরিণত করা হয়, নাম হয় বিটিসিএল।
বিটিসিএল এখন টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডোমেইন, ব্যান্ডউইডথ সঞ্চালন ইত্যাদি সেবা দেয়। অবশ্য তাদের ইন্টারনেট–সেবার গ্রাহক অনেক কম। বেসরকারি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা আইএসপিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে বিটিসিএল।
জিপন ইন্টারনেট প্যাকেজের আওতায় তারা ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭৬ গ্রাহককে সেবা দেয়।
নতুন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিটিসিএলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নেটওয়ার্ক থাকা সাপেক্ষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বিটিসিএল ৫০০ টাকায় ১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে। তাদের সেবা পেতে টেলিসেবা অ্যাপ বা মাইবিটিসিএল সাইটে গিয়ে নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দিতে হবে। সাধারণত তিন দিনের মধ্যেই সংযোগ দেওয়া হয়।
সংযোগ দেওয়ার পর কোনো সমস্যা দেখা দিলে, সে ক্ষেত্রে তাদের হটলাইন ১৬৪০২ নম্বরে অথবা অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে হয়। ২৪ ঘণ্টা সেবা পাওয়ার বিষয়টি তাদের জনবল ও সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।
বিটিসিএল টেলিফোন লাইন ও আইএসপিদের মতো তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবা দেয়। গ্রাহক চাইলে দুভাবেই ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পারবেন।
বিটিসিএল জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই তারা ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট–সেবা দিয়ে আসছে। ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বলছে, ///////////১৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দিতে তারা নিত ১৫ টাকা। ২০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট–সেবার মূল্য ১ হাজার ৫০ টাকা।////////////
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ফেসবুক পোস্টে জানান, ইন্টারনেট ও টেলিফোনের সংযোগ নিলে মাসিক চার্জের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০০ টাকা যোগ হবে। টেলিফোন কল চার্জের ক্ষেত্রে বিটিসিএলের ‘অফিশিয়াল চার্জ’ প্রযোজ্য হবে। এই সেবা শুধু প্রিপেইড সেবা হিসেবে পাওয়া যাবে এবং অফার সীমিত সময়ের জন্য। এলাকাভিত্তিক সংযোগ ফি প্রযোজ্য।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ফেসবুক পোস্টে বিটিসিএলের আরও সেবার ব্যাপারে জানান। তিনি বলেন, বিটিসিএল তাদের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) শ্রেণিতে কেনা ব্যান্ডউইডথের অতিরিক্ত ৪৫ শতাংশ বেনাপোলে ও ৪০ শতাংশ প্রণোদনা হিসেবে সারা দেশে দেবে।
আইএসপি শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ, সরকারি বা করপোরেট শ্রেণিতে ইন্টারনেট গ্রাহকদের অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ, শিক্ষা শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ ও ডেটা সেন্টার শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ ব্যান্ডউইডথ প্রণোদনা হিসেবে দেবে বিটিসিএল।