ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি
Published: 22nd, January 2025 GMT
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা না করলে তিনি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার এক দিন পরই এ হুমকি দিলেন ট্রাম্প।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেন, তাহলে দেশটির বিরুদ্ধে তিনি (ট্রাম্প) সম্ভবত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ব্যাপকভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প বলেন, তাঁর প্রশাসন ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টিও দেখছে। ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও কিছু করা উচিত বলেও এ সময় নিজের দৃষ্টিভঙ্গির জানান দেন। আমরা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলছি, আমরা খুব শিগগিরই প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও কথা বলতে যাচ্ছি। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকেও চাপ দিয়েছিলেন। তিনি এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু করেননি।
এদিকে ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন নিয়ে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির নথি তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রুবিও বলেন, আমাদের প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুর মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে শিগগিরই দাপ্তরিক তৎপরতা শুরু করবেন তিনি। একটি খসড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির নথি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দ্রুত অবসান হলেও ভবিষ্যৎ রুশ হামলা প্রতিরোধে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনীর অন্তত ২ লাখ সদস্য মোতায়েন করা প্রয়োজন বলে মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন জেলেনস্কি। রয়টার্স।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি