দুর্নীতি রোধে শিক্ষক নিয়োগ এমপিওভুক্তি হবে একসঙ্গে
Published: 23rd, January 2025 GMT
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে আর্থিক লেনদেনের অনেক বেশি অভিযোগ আসছে। আগে শিক্ষা ভবনে এমপিওভুক্তি দেওয়া হলেও এখন তা মাউশির ৯টি অঞ্চলে দেওয়া হচ্ছে। এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতি ও অর্থ লেনদেন এড়াতে প্রয়োজনে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি একসঙ্গে সম্পন্ন করা হবে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর পরিকল্পনা কমিশনের সভাকক্ষে শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ইরাবের সভাপতি ফারুক হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান সালমান, সাবেক সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ, নিজামুল হক, শরীফুল আলম সুমনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিক্ষা প্রশাসনকে আগে দুর্নীতি কমাতে হবে এবং সুস্থির অবস্থায় আনতে হবে। এখানে পুরোনোদের বদলি করে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আরও বহু কিছু মেরামত করতে হবে। তার পর আমি যদি থাকি, তখন শেষ দিকে সব মিলে একটা ‘শিক্ষা উপদেষ্টা পরিষদ’ হয়তো তৈরি করে দেব। ‘শিক্ষা কমিশন’ বললেই আগের ব্যর্থ কমিশনের কথা মনে হয়। তাই আমি এটাকে শিক্ষা কমিশন বলতে চাচ্ছি না।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের দুর্নীতি এক দিনে সমাধান করা সম্ভব না। আমি মন্ত্রণালয়ে একবার বলেছি, সেটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। সেটি মন্ত্রণালয়ের সবাই শুনেছে। কিন্তু শিক্ষা অধিদপ্তরগুলোতে এই বার্তা যায়নি। সেখানে গিয়ে প্রথমে একটি সতর্ক বার্তা দিতে হবে। তার পর দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নিয়ে একটি উদাহরণ তৈরি করতে হবে।
গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনবার চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তিতে কত টাকা ব্যয় হতো; গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তারা কত টাকা আয় করছে– এই দুটি বিষয়ের হিসাব নেওয়া হবে।
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি অন্যায্য মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা প্রাথমিকের সমমান। অথচ প্রাথমিকে জাতীয়করণ করা হয়েছে, কিন্তু ইবতেদায়িকে বাইরে রাখা হয়েছে। ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন ১ হাজার ৫০০, প্রধান শিক্ষকের বেতন ৩ হাজার টাকা মাত্র। তাদের সমস্যা আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে অনশন করে আমাদের বিব্রত করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। এটি না করে বরং কী করে কী করা যায়, সেই চিন্তা করতে আমাদের সময় দিন।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষায় জোর দিলেও বাংলাদেশে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনার্স-মাস্টার্স পড়িয়ে বেকার তৈরি করা হচ্ছে উল্লেখ করে অর্থনীতির এই শিক্ষক বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেকনিক্যাল শিক্ষা গ্রহণ করে। তবে আমাদের এখানে উল্টো। সবাই অনার্স-মাস্টার্স পড়ে বেকার হচ্ছে।
‘অন্তর্বর্তী সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’– ১৯ জানুয়ারি এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। বিজ্ঞপ্তিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা চেয়ারম্যানের
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সংস্থাটির সবাইকে একত্রিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে এক সভায় তিনি এ অনুরোধ জানান।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএসইসির কমিশনার মোহসিন চৌধুরী, আলী আকবর, ফারজানা লালারুখসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিসহ জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় এই সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পরিপূর্ণ দায়িত্বশীল হয়ে ও শৃঙ্খলার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সভায় কর্মকর্তাদের দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে বিএসইসির কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।
বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা আগের সব ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি কমিশনের বিভিন্ন সমস্যার সুরাহা করার বিষয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আশ্বাস দেন তাঁরা।
বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কমিশনের সঙ্গে পূর্ণ উদ্যম ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।