শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে আর্থিক লেনদেনের অনেক বেশি অভিযোগ আসছে। আগে শিক্ষা ভবনে এমপিওভুক্তি দেওয়া হলেও এখন তা মাউশির ৯টি অঞ্চলে দেওয়া হচ্ছে। এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতি ও অর্থ লেনদেন এড়াতে প্রয়োজনে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি একসঙ্গে সম্পন্ন করা হবে। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর পরিকল্পনা কমিশনের সভাকক্ষে শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ইরাবের সভাপতি ফারুক হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান সালমান, সাবেক সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ, নিজামুল হক, শরীফুল আলম সুমনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিক্ষা প্রশাসনকে আগে দুর্নীতি কমাতে হবে এবং সুস্থির অবস্থায় আনতে হবে। এখানে পুরোনোদের বদলি করে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আরও বহু কিছু মেরামত করতে হবে। তার পর আমি যদি থাকি, তখন শেষ দিকে সব মিলে একটা ‘শিক্ষা উপদেষ্টা পরিষদ’ হয়তো তৈরি করে দেব। ‘শিক্ষা কমিশন’ বললেই আগের ব্যর্থ কমিশনের কথা মনে হয়। তাই আমি এটাকে শিক্ষা কমিশন বলতে চাচ্ছি না।

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের দুর্নীতি এক দিনে সমাধান করা সম্ভব না। আমি মন্ত্রণালয়ে একবার বলেছি, সেটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। সেটি মন্ত্রণালয়ের সবাই শুনেছে। কিন্তু শিক্ষা অধিদপ্তরগুলোতে এই বার্তা যায়নি। সেখানে গিয়ে প্রথমে একটি সতর্ক বার্তা দিতে হবে। তার পর দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নিয়ে একটি উদাহরণ তৈরি করতে হবে।

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনবার চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তিতে কত টাকা ব্যয় হতো; গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তারা কত টাকা আয় করছে– এই দুটি বিষয়ের হিসাব নেওয়া হবে। 

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি অন্যায্য মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা প্রাথমিকের সমমান। অথচ প্রাথমিকে জাতীয়করণ করা হয়েছে, কিন্তু ইবতেদায়িকে বাইরে রাখা হয়েছে। ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন ১ হাজার ৫০০, প্রধান শিক্ষকের বেতন ৩ হাজার টাকা মাত্র। তাদের সমস্যা আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে অনশন করে আমাদের বিব্রত করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। এটি না করে বরং কী করে কী করা যায়, সেই চিন্তা করতে আমাদের সময় দিন। 

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষায় জোর দিলেও বাংলাদেশে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনার্স-মাস্টার্স পড়িয়ে বেকার তৈরি করা হচ্ছে উল্লেখ করে অর্থনীতির এই শিক্ষক বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেকনিক্যাল শিক্ষা গ্রহণ করে। তবে আমাদের এখানে উল্টো। সবাই অনার্স-মাস্টার্স পড়ে বেকার হচ্ছে। 

‘অন্তর্বর্তী সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’– ১৯ জানুয়ারি এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। বিজ্ঞপ্তিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক

‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’

আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।

এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।

বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?