প্রান্তিক নারীদের সরকারি সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, অসহায়, দুস্থ ও গরীব মানুষের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নানা কার্যক্রম চালু রয়েছে। কিন্তু যোগ্য অনেকেই ওসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বরং অযোগ্যরা নানাভাবে সুবিধা গ্রহণ করে থাকে। তাই প্রান্তিক নারীরা যাতে সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত সংলাপে এই আহ্বান জানানো হয়। বিএনপিএস’র ঢাকা পশ্চিম কেন্দ্র আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা। 

সংলাপে বক্তৃতা করেন থানা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন আক্তারী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সমাজ সেবা কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহির উদ্দিন, সমাজসেবা কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাহ্হার, আসক কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট শিল্পী সাহা, জরিনা সিকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ রোকসানা সুলতানা, লরেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো.

সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এমএ মান্নান মনির, শাপলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হাসিনা আক্তার, বিএনপিএস’র কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারি সিঁথী ঘোষ, ব্র্যাকের তানিয়া আক্তার, বারসিকের হেনা আক্তার রূপা।

আরো পড়ুন:

স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার সিক্স অনুর্ধ্ব-১৯ মেয়েরা 

বিশ্বকাপের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ: ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়

সংলাপে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন বিএনপিএস’র ঢাকা পশ্চিম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, “বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মা ও শিশু ভাতা, দুস্থ নারী ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নানা প্রকল্প রয়েছে। এসব ভাতার উপকারভোগী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের। কিন্তু নানা কারণে যোগ্য অনেকেই সরকারের এই সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন। এই বঞ্চনা অবসানের জন্য সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।”

সংলাপে উপস্থিত সরকারী কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদেয় সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন এবং প্রকৃত ব্যক্তি যেন সেবা পায় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কমিটিতে নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ