বন্দরে প্রবাসীর ২১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
Published: 23rd, January 2025 GMT
বন্দরে বাস যাত্রী দুই দুবাই প্রবাসীর ২১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার ১০ দিন পর তিন বাস ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধৃতরা হলো- পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার মাধবখালি গ্রামের মোমেন উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম মাঝি(৫২), পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার হাওলাদার বাড়ি গ্রামের আব্দুল হামিদ হাওলাদারের ছেলে নেসার উদ্দিন বাচ্চু (৫২) ও একই এলাকার শাহানাজ মুন্সির ছেলে বাবুল (৪০)।
গ্রেপ্তারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ । এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার কেওঢালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, আবু হানিফ ও রাজিব ভূঁইয়া নামের দুবাই প্রবাসীকে মামলার কথা বলে বাস থেকে র্যাব পরিচয়ে মারধর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরে তাদের কাছে থাকা নগদ ২১ লাখ টাকা, পাসপোর্ট ও মোবাইলসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে রাজধানীর ডেমরার আমুলিয়া এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। বাস থেকে দুই দুবাই প্রবাসীকে তুলে নেয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়।
বন্দর থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আরাগ আনন্দপুর গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে আবু হানিফ ও তার বন্ধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের কামাল ভূঁইয়ার ছেলে রাজিব ভূঁইয়া দুবাই থেকে গত ১৪ জানুয়ারি ভোর ৪টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
এদিন তারা বিমানবন্দর থেকে বায়তুল মোকাররম এলাকায় গিয়ে কিছু ডলার বিক্রি করেন। পরে তারা দুপুর দেড়টার দিকে এশিয়া লাইন পরিবহনের একটি বাসে করে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
মামলার বাদী প্রবাসী আবু হানিফ জানান , আমাদের বাসটি বন্দর থানার কেওঢালা এলাকায় পৌঁছালে সাদা রঙের একটি হাইয়েজ গাড়ি (মাইক্রোবাস) এসে বাসের সামনে দাঁড়িয়ে গতিরোধ করে।
এসময় র্যাবের পোশাক পরিহিত ৩/৪ জন ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ ও পিস্তল হাতে বাসে উঠে আমাদের (আবু হানিফ ও রাজিব) বিরুদ্ধে মামলা আছে বলে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে টানাহেঁচড়া করে সাথে থাকা দুটি ব্যাগসহ জোরপূর্বক বাস থেকে নামায়।
এসময় আমরা চিৎকার করতে থাকি, যাত্রীরা তাদের বাধা দেয়। গাড়ির স্টাফরা ঘটনার ভিডিও করে। কিন্তু তারা সেদিকে কর্ণপাত না করে আমাদের নামিয়ে তাদের মাইক্রোবাসে তুলে হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর করে। এ সময় তারা পায়ে গুলি করে।
তারা আমাদের কাছে থাকা কিছু ডলারসহ ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, ৩টি পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল লুটে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে বিকাল ৫টার দিকে ঢাকার ডেমরা এলাকায় নির্জন রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। পরে বিষয়টি র্যাব ও থানা পুলিশকে জানানো হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক য় ২১ ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস