ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের উচ্চ প্রবৃদ্ধির দাবি ছিল ‘ভুয়া’
Published: 24th, January 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময় দেশের অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিয়ে যা বলা হতো, তা ছিল ‘ভুয়া’। শেখ হাসিনা দাবি করেছিলেন প্রবৃদ্ধিতে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস এসব কথা বলেন। একই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো আগ্রহ তার নেই।
হাসিনা সরকারের দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন না তোলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি।
সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে চলছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসও এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনের ফাকে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি (হাসিনা) দাভোসে এসে দেশ কীভাবে চালাতে হয়, সে কথা সবাইকে বলেছিলেন। কেউ তখন প্রশ্ন করেননি। এটা মোটেও কোনো ভালো বিশ্বব্যবস্থা নয়।’
শেখ হাসিনা সরকারের স্বৈরাচারী হয়ে ওঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দায় আছে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এটা যে ঘটেছে, এর জন্য পুরো বিশ্ব দায়ী। তবে এটা বিশ্বের জন্য একটি শিক্ষা।’
প্রবৃদ্ধি নিয়ে হাসিনার একটি মন্তব্যের উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তিনি (হাসিনা) বলেছিলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার অন্য সবার চেয়ে বেশি। এটা একেবারে মিথ্যা।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’